Categories
শেয়ারের মৌলিক বিষয়বস্তু

শেয়ার বাজার কি?

শেয়ার বাজার এমন একটি স্থান কে নির্দেশ করে যেখানে বিভিন্ন পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির শেয়ার  কেনা ও বেচা করা হয়। একে পুঁজি বাজারও বলা হয়। শেয়ার কেনা ও বেচার জন্য বাংলাদেশে দুটি বাজার আছে। একটি ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ, অপরটি চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ। আবার এই দুটি বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য রয়েছে সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন।

Categories
শেয়ারের মৌলিক বিষয়বস্তু

শেয়ার কি?

পুঁজিবাজারে শেয়ার বলতে একটি কোম্পানির মালিকানার অংশ বিশেষকে বোঝায়।  প্রাইভেট ও পাবলিক লিমিটেড কোম্পানির মূলধন অনেকগুলো ভাগে বিভক্ত থাকে ।  প্রতিটি ভাগ হল একটি শেয়ার। কোম্পানির মালিকানাসত্ত্ব  শেয়ারের মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। একটি কোম্পানির কতগুলো শেয়ার থাকবে তা নির্ভর করে ওই কোম্পানির মূলধন কত এবং শেয়ারের অভিহিত/ফেইস মূল্য কত তার উপর।

বেক্সিমকো কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন/পেইড আপ ক্যাপিটাল ৭৮৬.৩ কোটি টাকা। আর তার শেয়ারের অভিহিত মূল্য/ফেইস ভ্যলু ১০ টাকা। এক্ষেত্রে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা দাঁড়ায় (৮৭৬.৩ কোটি/ ১০ টাকা )= ৮৭.৬৩ কোটি।

Categories
শেয়ারের মৌলিক বিষয়বস্তু

শেয়ার হোল্ডার কি?

যদি কেউ কোন কোম্পানির কতগুলো শেয়ার অংশ ক্রয়  করে তাকে সেই অংশের মালিক বা শেয়ারহোল্ডার বলে। এক কথায় কোন কোম্পানীর শেয়ারের মালিকদের বলা হয় শেয়ারহোল্ডার। বাংলাদেশে সাধারণত ৫ শ্রেনীর শেয়ারহোল্ডার দেখা যায় ডিরেক্টর, গভর্নমেন্ট, ইন্সটিটিউট, ফরেইন এবং পাবলিক।

একজন শেয়ারহোল্ডার সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কতটুকু মালিক, তা নির্ধারিত হয় তার কাছে থাকা ওই কোম্পানির শেয়ার সংখ্যার উপর। শেয়ারহোল্ডাররা কোম্পানি ঘোষিত লভ্যাংশও পেয়ে থাকেন শেয়ার সংখ্যার ভিত্তিতে।তাই বলা যায়, শেয়ার এমন এক ধরনের সিকিউরিটি যা একটি কোম্পানির মালিকানা এবং তার আয় ও সম্পদের ওপর অংশীদারিত্ব প্রকাশ করে। বেক্সিমকো কোম্পানির ৮৭.৬৩ কোটি  শেয়ারের মধ্যে পাবলিক  ৪৬.৫১  লাখ শেয়ার ধারণ করছেন। তাই পাবলিক বেক্সিমকো কোম্পানির (৮৭.৬৩ কোটি /  ৪৬.৫১  লাখ)* ১০০ = ৫৩.০৭% মালিক। বেক্সিমকো কোম্পানির প্রায়  অর্ধেকের বেশিরভাগ অংশের মালিক জনগন।

Categories
শেয়ার বাজার

শেয়ার বাজার ইনডেক্স বা সূচক

শেয়ার ইনডেক্স বা বাংলায় শেয়ার সূচক বলতে শেয়ার বাজারের একটি অংশের মুল্যের পরিবর্তনগুলির পরিসংখ্যানিক পরিমাপকে বোঝায়। এক কথায় কিছু শেয়ারের দামের সমষ্টিগত পরির্বতনকে বুঝায়। কোন ইনডেক্সের ভিতর নির্বাচিত কিছু শেয়ার থাকে তাদের ভিতর কিছু শেয়ারের দাম কমে আবার কিছু শেয়ারের দাম বাড়ে। তাই তাদের অভার-অল কি ধরনের পরিবর্তন হয়  তা বোঝার জন্য শেয়ার ইনডেক্সগুলো ব্যবহার করা হয়। ইনডেক্সকে সম্পূর্ণ শেয়ারবাজারের মূল্যের ওঠানামার নির্দেশক হিসেবে ধরা হয়।

শেয়ারবাজারে একের অধিক ইনডেক্স থাকতে পারে। বাংলাদেশের দুই শেয়ারবাজারে মোট ৮টি ইনডেক্স বা সূচক রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৩টি আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ৫টি সূচক রয়েছে।

একজন বিনিয়োগকারীকে অবশ্যই ইনডেক্স এর তাৎপর্য বুঝতে হবে। প্রতিটি ইনডেক্সের একটি ভ্যালু বা মান থাকে । ধরুন গতকাল DSEX ইনডেক্সের ভ্যালু ছিল ৬০০০ আজকে তা বেড়ে  দাড়িয়েছে  ৬০৬০ সূচকে। তাহলে আমরা বলতে পারি সূচকের পরিমান এক দিনে বৃদ্ধি পেয়েছে ৬০ পয়েন্ট এবং গতকালকের তুলনায় আজ ইনডেক্সের পরিমান ১% বৃদ্ধি পেয়েছে। মার্কেট ক্যাপিটালের পরিমান বৃদ্ধি পেলেই সূচকের মান বৃদ্ধি পায়।

Categories
শেয়ারের মৌলিক বিষয়বস্তু

শেয়ারের ধরন সমূহ

শেয়ারের প্রধান দুটি ধরণ হচ্ছে কমন শেয়ার ও প্রেফারেন্স শেয়ার।দুই ধরনের শেয়ারহোল্ডারই কোম্পানির মালিক। বাংলাদেশে শুধু কমন শেয়ারই লেনদেনযোগ্য।

কমন শেয়ারের ক্ষেত্রে ওই শেয়ারের মালিক কোম্পানির লভ্যাংশ পেয়ে থাকেন,আবার তিনি সাধারণ সভা এবং বিশেষ সাধারণ সভায় ভোটও দিতে পারেন।

প্রেফারেন্স শেয়ারের মালিক লভ্যাংশ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন। এমনকি কোম্পানি কোন কারণে দেওলিয়া হয়ে গেলেও তিনি তার পাওনার বিষয়ে অগ্রাধিকার পাবেন।  তবে এ ধরনের শেয়ারধারীদের কোনো ভোটাধিকার থাকে না।

প্রেফারেন্স শেয়ারের ক্ষেত্রে প্রাপ্য লভ্যাংশ আগেই নির্ধারণ করা থাকে। কিন্তু কমন বা অর্ডিনারি শেয়ারের ক্ষেত্রে লভ্যাংশ কম-বেশি হতে পারে। এমনকি কোনো বছর মুনাফা অর্জন সত্ত্বেও পরিচালনা পর্ষদ লভ্যাংশ ঘোষণা নাও করতে পারে। কোম্পানির পারফরমেন্স ভাল হলে লভ্যাংশের হার বেড়ে যায় বলে বাজারে কমন শেয়ারের দামও বাড়ে। তাই এ শেয়ারে মূলধনী মুনাফার ভাল সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু প্রেফারেন্স শেয়ারের লভ্যাংশ নির্ধারিত থাকে বলে এতে মূলধনী মুনাফার তেমন সম্ভাবনা বা সুযোগ থাকে না। অনেক ক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সময় পর প্রেফারেন্স শেয়ারের অংশবিশেষ বা পুরোটা সাধারণ শেয়ারে রূপান্তরের সুযোগ থাকে। অনেক দেশে কমন শেয়ারের মত প্রেফারেন্স শেয়ার স্টক এক্সচেঞ্জে কেনাবেচা হয়।

Categories
শেয়ার বাজার

DSEX, DSES, DS30 কি?

DSEX ইনডেক্স এর পূর্ণরুপ হচ্ছে Dhaka Stock Exchange Board Index। বাংলায় একে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বোর্ড ইনডেক্স ও বলে । DSEX  মোট ইক্যুইটি মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের প্রায় ৯৭% প্রতিফলিত করে। DSEX ইনডেক্স লিস্টে থাকতে হলে কোম্পানিটির মূলধন ১০০ মিলিয়ন টাকার উপরে থাকতে হবে। DSEX ইনডেক্স এর বেস বা সাপোর্ট ভ্যালু ২৯৫১.৯১ (১৭ জানুয়ারি ২০০৮)।

DSES ইনডেক্স কে বাংলায় শরীয়াহ সূচক বলা হয়। এটি DSEX এর একটি সাবসেট যা শরিয়াহ, ইসলামী ধর্মীয় আইন যেমন হারাম বাণিজ্য, মাদক উৎপাদন, সুদ ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান, বিজ্ঞাপনী সংস্থা ইত্যাদি এই সূচকে অন্তর্ভূক্ত হবে না।  ইসলামি শরিয়াভিত্তিক বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসইএস) সংযুক্ত করা হয়।

DS30 ৩০ টি প্রধান বা লিডিং কোম্পানি নিয়ে DS30 ইনডেক্স গঠিত হয়। DS30 মোট ইক্যুইটি মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশনের প্রায় ৫১% প্রতিফলিত করে। DS30 ইনডেক্স লিস্টে থাকতে হলে কোম্পানিটির মূলধন ৫০০ মিলিয়ন টাকার উপরে থাকতে হবে এবং ৩ মাসে গড়ে প্রতিদিন কমপক্ষে ৫ মিলিয়ন টাকার লেনদেন হতে হবে। এছাড়াও, সর্বশেষ ১২ মাসে পজিটিভ নেট আয় দ্বারা পরিমাপকৃত শেয়ারগুলিকে অবশ্যই লাভজনক হতে হবে। DS30 ইনডেক্স এর বেস বা সাপোর্ট ভ্যালু ১০০০।

এইখানে DSEX সূচকের মান ৬০৬৯.২৮ যা গতকালকের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে ১৪.২৩ পয়েন্ট এবং গতকালকের তুলনায় আজ ইনডেক্সের পরিমান .২৪% বৃদ্ধি পেয়েছে

Categories
শেয়ারের মৌলিক বিষয়বস্তু

শেয়ারের শ্রেনীবিভাগ সমূহ

বাংলাদেশ স্টক মার্কেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানীগুলোর পারফরমেন্সের ভিত্তিতে A, B, N এবং Z এই ৪ টা বিভাগে ভাগ করা হয়েছে। বিনিয়োগকারীদেরকে সাধারনভাবে ভাল ও মন্দ শেয়ার চিনিয়ে দেবার জন্য এই বিভাগীকরন করা হয়েছে।

১. A-Category: যে সব কোম্পানিতে নিয়মিত বোর্ড  মিটিং করা হয় এবং  ১০% বা তার বেশি লভ্যাংশ (Dividend) বছর শেষে প্রদান করা হয় । সে সব কোম্পানীসমূহ এ গ্রুপের অর্ন্তভুক্ত।

২. B-Category: এ ধরনের ক্যাটাগরির  কোম্পানিতে নিয়মিত বার্ষিক বোর্ড মিটিং করা হয়  কিন্তু   বার্ষিক  লভ্যাংশ  (Dividend) ১০% এর নিচে   প্রদান করা হয়।  এসব  কোম্পানীসমূহ B গ্রুপের অর্ন্তভুক্ত।

৪. N-Category:  এই গ্রুপে অর্ন্তভুক্ত কোম্পানিগুলো এই বছর স্টক মার্কেটে  লিপিবদ্ধ হয়েছে ।যাকে নতুন শেয়ারও বলে। সাধারনত কোন শেয়ার স্টক মার্কেটে লিপিবদ্ধ হওয়ার পর  আর্থিক বছর শেষ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত এই গ্রুপে রাখা হয়। আর্থিক বছর শেষ হলে এদের পারফরমেন্স উপর ভিত্তি করে A, B অথবা Z গ্রুপে স্থানান্তর করা হয়।

৫. Z-Category:  এই গ্রুপে অর্ন্তভুক্ত কোম্পানিগুলো  নিয়মিত বোর্ড মিটিং করে না এবং বার্ষিক লভ্যাংশ প্রদানে ব্যর্থ কিংবা সর্বশেষ ৬ মাস উৎপাদন  বন্ধ থাকলে এই গ্রুপে স্থানান্তর করা হয়।

StockNow App ক্যাটাগরি অনুযায়ী শেয়ার ভাগ করা আছে।

Categories
শেয়ার বাজারের প্রাথমিক ধারণা শেয়ারের মৌলিক বিষয়বস্তু

আইপিও (IPO) বা প্রাইমারি শেয়ার কি ?

প্রাইমারি শেয়ার  ইনিশিয়াল পাবলিক অফার বা আইপিও নামেও পরিচিত।  বাজারে কোন কোম্পানি প্রথম প্রাইমারি শেয়ারের মাধ্যমে প্রবেশ করে। অর্থাৎ নতুন কোন কোম্পানিকে বাজারে অন্তর্ভুক্ত হতে হলে তাকে প্রথমে প্রাইমারি শেয়ার ছাড়তে হবে।

প্রাইমারি শেয়ার কিনতে আগ্রহীদের পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দরখাস্ত আহবান করে সংশ্লিষ্ট কোম্পানি। বর্তমানে দেখা যায়, কোম্পানির প্রয়োজনীয় শেয়ার লটের চেয়ে প্রায় ৫০-৬০ গুণ এমনি ১০০ গুণ পর্যন্ত বেশি দরখাস্ত জমা পড়ে। সেজন্য সংশ্লিষ্ট কোম্পানি লটারির মাধ্যমে প্রয়োজনীয় শেয়ার লট সংগ্রহ করে থাকে। প্রাইমারি শেয়ার বাজারে এলে বিও অ্যাকাউন্টধারী যে কেউ এই শেয়ার কেনাবেচা করতে পারে

প্রতিটি কোম্পানির প্রাইমারি  শেয়ার যে দামে ছাড়ে  তাকে  ফেইস ভ্যালু বলে । কখনো কখনো ফেইস ভেল্যুর সাথে  প্রিমিয়াম যোগ করে একটি নির্দিষ্ট টাকায় শেয়ারটি অফার করে থাকে । ধরা যাক কোন কোম্পানির ফেস ভ্যালু ১০ টাকা এবং তারা ৫ টাকা প্রিমিয়াম সহ শেয়ারের দাম নির্ধারণ করল ১৫ টাকা। এখন যদি ঐ শেয়ার IPO এর মাধ্যমে পেয়ে থাকেন তবে প্রতি শেয়ারে দাম পরে ১৫ টাকা। তারপর এখন ইচ্ছা করলে এই শেয়ার সেকেন্ডারি মার্কেটে বিক্রি করতে পারবেন।

আইপিও ছাড়তে দুটি শর্ত পূরণ করতে হবে:

  • কোম্পানিটি অবশ্যই একটি পাবলিক লিমিটেড কোম্পানি হতে হবে।
  • কোম্পানিকে অবশ্যই শেয়ার মার্কেটে (এসইসি, ডিএসই এবং সিএসই) তালিকাভুক্ত হতে হবে।
Categories
শেয়ারের মৌলিক বিষয়বস্তু

সেকেন্ডারি শেয়ার কি?

প্রাইমারি শেয়ার ক্রয় করে ম্যাচিওর হওয়ার পর যখন  বিক্রি করে দেয় তখন তা সেকেন্ডারি শেয়ারে পরিনত হয়। সেকেন্ডারি শেয়ারগুলো শেয়ার বাজারে ক্রয় ও বিক্রি করা যায় । সেকেন্ডারি শেয়ার বাজারে ব্যবসা করতে হলে শেয়ার মার্কেট সম্পর্কে ভাল জ্ঞান থাকতে হবে। অর্থাৎ ব্যবসা করার জন্য ফান্ডামেন্টাল এবং টেকনিক্যাল এনালাইসিস সম্পর্কে ধারনা থাকতে হবে। এ ধারনা অর্জন করতে পারলে শেয়ার ব্যবসায় ভাল লাভ করতে পারবেন। আর যদি দীর্ঘমেয়াদে শেয়ারে ব্যবসা করেন এবং একে পেশা বা বাড়তি ইনকামের সোর্স হিসেবে ব্যবহার করতে চান তবে সেকেন্ডারি মার্কেট খুবই উত্তম যায়গা।