আপনার বিও একাউন্টে টাকা জমা করার পর আপনি শেয়ার বেচা-কেনার জন্য তৈরি। আপনি বিভিন্ন ভাবে শেয়ার কেনা বেচা করতে পাড়বেন-
- অনলাইন(মোবাইল এপ্স বা আমাদের ওয়েব সাইট লিংক)
- অথোরাইজ রিপ্রেজেন্টেটিভকে ফোনের মাধ্যমে
- সরাসরি ব্রাঞ্চে এসে
আপনার বিও একাউন্টে টাকা জমা করার পর আপনি শেয়ার বেচা-কেনার জন্য তৈরি। আপনি বিভিন্ন ভাবে শেয়ার কেনা বেচা করতে পাড়বেন-
আপনি যেকোন পরিমাণ টাকা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে শুরু করতে পারেন তবে প্রাথমিক বাজার বা ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং অর্থাৎ আইপিও তে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিও হিসাবে ন্যূনতম ২০,০০০ টাকা সেকন্ডারি মার্কেটে বিনিয়োগ থাকতে হবে এবং আইপিও আবেদনের জন্য ১০,০০০ টাকা বিও অ্যাকাউন্ট নাম্বারে থাকতে হবে। সুতরাং সর্বনিম্ন ৩০,০০০ টাকা দিয়ে বিনিয়োগ শুরু করা উত্তম।
সেকেন্ডারি মার্কেটে ব্যবসায় করতে পুঁজির পরিমান আসলে নির্ভর করে বিনিয়োগকারীর কাঙ্ক্ষীত লাভের হার বা ‘এক্সপেক্টেড রেট অফ রিটার্নের’ উপর।
আপনার বিও একাউন্টে টাকা জমা করা খুবই সহজ। বাংলাদেশের যেকোন ব্যাংক একাউন্ট থেকে কোন রকম খরচ ছাড়াই টাকা জমা করতে পারবেন। আপনি অনলাইনে অথবা সরাসরি আমাদের যে কোন ব্রাঞ্চে এসেও টাকা জমা দিতে পারবেন অথবা আপনি চাইলে বিকাশ, রকেট, নগদ এর মাধ্যমেও টাকা জমা দিতে পারবেন ( সার্ভিস চার্জ প্রযোজ্য)
বিও একাউন্ট খোলার পর আপনি আপনার বিও একাউন্টে টাকা জমা করবেন। আমাদের ব্যাংক একাউন্টে সরাসরি টাকা জমা দিয়ে জমা স্লিপটির স্ক্যাক/ছবি অথবা বিকাশ, রকেট, নগদ এর মাধ্যমে জমা দিয়ে (১% চার্জ প্রযোজ্য) করে তার স্ক্রিন সট অথবা অনলাইনে আমাদের ব্যাংক একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে তার ছবি/স্ক্রিন সট নিয়ে আমাদের ওয়েব সাইটের ডিপোজিট বা জমা(Deposit Link) ফর্ম পুরন করে টাকা আপনার বিও একাউন্টে জমা করার জন্য আবেদন করতে হবে।
আসলে আমাদের স্টক মার্কেটে এক ধরনেরই বিও একাউন্ট রয়েছে। আপনি যে কোন বিও একাউন্ট দিয়ে আইপিও (প্রাইমারি) এবং শেয়ার ক্রয়-বিক্রয় (সেকেন্ডারি) এর জন্য ব্যবহার করতে পারবেন। সব বিও একাউন্টের কার্যকারিতা একই।
প্রাইমারি শেয়ার (বা বন্ড) হচ্ছে সম্পুর্ন নতুন শেয়ার যা জন সাধারণের জন্য তৈরি এবং উপস্থাপন করা হয় ( উদাহরণ হিসেবেঃ প্রাথমিক গনপ্রস্তাব বা আইপিও এর মাধ্যমে যা লটারি আকারে ছাড়া হয়)
সেকেন্ডারি মার্কেট হচ্ছে আইপিও পরবর্তী মার্কেট, প্রস্তাবিত শেয়ার বা বন্ডের লেনদেন হয়, যেমন স্টক এক্সচেঞ্জ ( স্বাভাবিক ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে)
কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন বিও একাউন্ট খোলার জন্য? একটি একক/যৌথ বিও একাউন্ট খোলার জন্য কেবল প্রয়োজন:আবেদনকারীর কপি ছবিএনআইডি বা পাসপোর্টের কপি (স্ক্যান/ছবি)ব্যাংকের তথ্য |
বাংলাদেশে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করার জন্য আপনার একটি ব্রোকার হাউজে একটি BO (Beneficiary Owner’s) অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। একটি বিও অ্যাকাউন্ট একটি ব্যাংক অ্যাকাউন্টের মতো, তবে এটি আপনি একটি ব্রোকার হাউজে (যেমন মিডওয়ে সিকিউরিটিজ লিমিটেড) এ খুলবেন । আপনি আপনার BO অ্যাকাউন্টে ব্যাংক একাউন্টের মতোই অর্থ জমা ও উত্তোলন করতে পারবেন । তবে এক্ষেত্রে সর্বনিম্ন আমানত সংরক্ষণের প্রয়োজন নেই।
সাধারনত দুই ধরনের বিও একাউন্ট রয়েছে:১. সাধারন বিও একাউন্ট-বাংলাদেশী অধিবাসী এবং বাংলাদেশে বসবাস করে এমন ব্যক্তি সাধারন বিও একাউন্ট খুলতে পারে। সাধারন বিও একাউন্ট আবার তিন ধরনের-
· একক মালিকানাধীন বিও একাউন্ট(বিনিয়োগকারী নিজের নামে বিও একাউন্ট খুলতে পাড়বে)
· যৌথ মালিকানাধীন বিও একাউন্ট(দুই জন ব্যক্তি সম্মিলিত ভাবে একটি বিও একাউন্ট খুলতে পাড়বে)
· বিনিয়োগোকারী চাইলে নিজের কোম্পানির নামে বিও একাউন্ট খুলতে পারবেন।
২. এনআরবি বিও একাউন্ট (নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশী)- বাংলাদেশী প্রবাসীদের এবং বিদেশী নাগরিকদের বাংলাদেশের শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করা সুবিধা দেয়ার জন্য এই ধরনের বিও একাউন্ট খোলা হয়ে থাকে।
এছাড়াও অন্য এক ধরনের একাউন্ট রয়েছে যা লিংক বিও একাউন্ট নামে পরিচিত। আপনার বর্তমান ব্রোকারেজ হাউজ থেকে কোন শেয়ার বিক্রি না করে লিংক বিও একাউন্টের মাধ্যমে অন্য হাউজে বিও একাউন্ট ট্রান্সফার করতে পারবেন।
ব্যবসার সম্প্রসারণের উদ্দেশ্যে বোনাস ইস্যু করা হয় বলে ভবিষ্যতে কোম্পানির ব্যবসা ও মুনাফার প্রবৃদ্ধির বেশ সম্ভাবনা থাকে।তবে মূলধন বৃদ্ধির হারের চেয়ে বেশি মুনাফা না হলে শেয়ার প্রতি আয় বা ইপিএস কমে যেতে পারে।এমন অবস্থায় কোম্পানির লভ্যাংশ দেওয়ার সামর্থও কমে যায়।তাই পরিশোধিত মূলধন বেশি বাড়ানো দীর্ঘ মেয়াদে কোম্পানির মুনাফা ও লভ্যাংশের ধারাবাহিকতা ধরে রাখার ক্ষেত্রে হুমকী তৈরি করে।
আমাদের দেশে ব্যবসা সম্প্রসারণের প্রয়োজন না হলেও অনেক সময় বোনাস ইস্যু করা হয়ে থাকে।আর এসব ক্ষেত্রে কিছু অসাধু উদ্যোক্তা নানা হীন উদ্দেশ্য থেকে এ পথ বেছে নেন।
প্রথমত:পুরনো ধ্যান ধারণার কারণে অনেক বিনিয়োগকারী লভ্যাংশ হিসেবে নগদ অর্থের চেয়ে বোনাসকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন।ফলে ভাল বোনাস দিলে বাজারে সে কোম্পানির শেয়ারের দাম অনেক বেড়ে যায়।বেনামী শেয়ার ব্যবসা থেকে লাভবান হওয়ার হীন উদ্দেশ্য থেকে অনেক ছোট ও স্থবির কোম্পানিও বোনাস ইস্যু করে থাকে।
দ্বিতীয়ত:অনেক সময় নগদ অর্থ হাতছাড়া না করার বাসনা থেকেও বোনাস লভ্যাংশ দেওয়া হয়ে থাকে।
তৃতীয়ত:অনেক রুগ্ন কোম্পানির উদ্যোক্তারা কারসাজির মাধ্যমে কোম্পানিকে লাভজনক দেখিয়ে বোনাস শেয়ার ইস্যু করে।পরবর্তীতে সে শেয়ার বাজারে বিক্রি করে প্রচুর অর্থ তুলে নেয়।কিন্তু বাস্তবে কোম্পানিগুলো লোকসানি হওয়ায় এদের পক্ষে নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা সম্ভব নয়।
কখনো কখনো কোনো কোম্পানি শেয়ারহোল্ডারদেরকে নগদ লভ্যাংশ না দিয়ে শেয়ার অথবা একইসঙ্গে নগদ অর্থ ও শেয়ার দিয়ে থাকে।আমাদের বিনিয়োগকারীদের কাছে তা বোনাস লভ্যাংশ হিসেবে পরিচিত।
সাধারণত কোম্পানি তার ব্যবসা সম্প্রসারণের প্রয়োজনে সঞ্চিতির একাংশকে মূলধনে রূপান্তর করে।যে পরিমাণ অর্থ মূলধনে রুপান্তর করা হয় তার সমপরিমাণ অর্থের শেয়ার ইস্যু করা হয়।আর তা আনুপাতিক হারে বিতরণ করা হয় শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে।
ধরা যাক,একটি কোম্পানির পরিশোধিত মূলধন ১০ কোটি টাকা।আর তার শেয়ার সংখ্যা এক কোটি।কোম্পানিটির ৬ কোটি টাকার সঞ্চিতি আছে।কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য সঞ্চিতি থেকে ৫ কোটি মূলধনে রূপান্তর করতে চায়। তাহলে কোম্পানিটিকে ৫০ শতাংশ হারে বোনাস ঘোষণা করতে হবে।এ ক্ষেত্রে কোম্পানিটিকে নতুন করে ৫০ লাখ শেয়ার ইস্যু করতে হবে।আর প্রত্যেক বিনিয়োগকারী বিদ্যমান দুটি শেয়ারের বিপরীতে একটি বোনাস শেয়ার পাবেন।বোনাসের মাধ্যমে কোম্পানির শেয়ার সংখ্যা ও পরিশোধিত মূলধন বেড়ে যায়।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলো বছর শেষে তাদের বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ দিয়ে থাকে। যে জন্য একবছর একটি কোম্পানির শেয়ার ধরে রাখতে হবে তা নয়। মূলত কোম্পানির রেকর্ড ডেটের (শেয়ারের মালিকানা নির্ধারণের দিনের) আগে শেয়ার কিনলে ঘোষিত যে কোন কোম্পানির লভ্যাংশ প্রাপ্তির যোগ্য হিসাবে বিবেচিত হবেন।
একটু আলোচনায় আসি। কর পরবর্তী মুনাফার পর কোম্পানিগুলো সেখান থেকে বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ বিতরন করে থাকে। কেউ স্টক বা শেয়ার লভ্যাংশ হিসাবে দিয়ে থাকে। আর কোন কোম্পানি নগদ বা টাকা মুনাফা হিসাবে দিয়ে থাকে। যখন কোন কোম্পানি বছর শেষে লাভ করতে পারে না তখন ক্যাটাগরি টিকিয়ে রাখার জন্য রিজার্ভ (সংরক্ষিত তহবিল) থেকেও লভ্যাংশ বিতরণ করে থাকে। তবে কোন কোম্পানির আয় বা ইপিএস নেগেটিভ থাকলে নগদ লভ্যাংশ প্রদান করে না স্টক বা বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিয়ে থাকে।
উদাহরন হিসাবে, “এ” কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের ৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষনা করেছে এবং এর ফেজভ্যালু বা অভিহিত মূল্য ১০ টাকা। কোম্পানির শেয়ার প্রতি দাম বর্তমানে ২০০ টাকা হলেও বিনিয়োগকারী লভ্যাংশ দেয়া হবে ১০ টাকার উপর। এ হিসাবে ১০০টি শেয়ারে বিপরীতে বিনিয়োগকারী লভ্যাংশ ৭০ টাকা।