শেয়ার মার্কেট এনালাইসিস করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা প্রধানত যে দু’ধরনের এনালাইসিস ব্যবহার করে থাকেন একটি হচ্ছে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এবং অপরটি ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো পূর্বের মূল্যের গতিবিধি পর্যালোচনা করা ও এর উপর ভিত্তি করে বর্তমান ট্রেডিং কন্ডিশনে মূল্য কেমন মুভ করছে তা নির্ধারন করা এবং তা থেকে নিকট ভবিষ্যতের মূল্যের সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে একটা ধারণা নেওয়া।
টেকনিক্যাল এনালিস্টদের মূল বিশ্বাস এই যে মার্কেটের সকল ধরনের তথ্য মূল্যের মধ্যেই পাওয়া যায় এবং সংক্ষেপে বলতে গেলে তাদের ধারণা করে “যে সবকিছুই চার্টের মধ্যে রয়েছে ”
ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর মতন এখানে কোন কোম্পানির আর্থিকদিকগুলো বিশ্লেষণ করা হয় না ।
একজন বিনিয়োগকারী যদি টেকনিক্যাল এনালাইসিস এ দক্ষ হয় এবং আগের মার্কেট প্যাটার্ন গুলো শনাক্ত করতে পারেন তবে তিনি ভবিষ্যৎ দামের একটি ধারণা করতে পারবেন। টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো বিভিন্ন ধরনের চার্ট প্যাটার্ন যা একজন বিনিয়োগকারীকে ভবিষ্যতের মূল্য
সম্পর্কে অনুমান করতে সহায়তা করে।ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এনালাইসিস খুবই কার্যকরী।
আপনারা নিশ্চয়ই একটি প্রাচীন প্রবাদ শুনে থাকবেন “history tends to repeat itself”।এটিই টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর সারসংক্ষেপ কারণ টেকনিক্যাল এনালাইসিসের বিশ্বাস করা হয়েছে পূর্বে যেসব প্যাটার্ন তৈরি হওয়ার পর মার্কেট যেভাবে আচরণ করেছে ভবিষ্যতেও তা হওয়ার পর মার্কেট একই ভাবে আচরণ করবে।আপনি যদি সে সব প্যাটার্ন গুলো জানেন এবং চার্ট এর মধ্যে তা ধরতে পারেন তাহলে আপনি মূল্যের গতিবিধি সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন।চার্ট প্যাটার্ন গুলোর মূলে রয়েছে হিউম্যান সাইকোলজি যা সাধারণত পরিবর্তন হয় না তাই এগুলো সচরাচর পূর্বের মত কাজ করে থাকে।
ইতিহাস:
স্টক মার্কেটে টেকনিক্যাল এনালাইসিস কয়েকশ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৭ শতকের দিকে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর যাত্রা শুরু করেছিলেন ইউরোপে “Joseph De La Vega” ডাচ মার্কেট এনালাইসিস করতে গিয়ে। কিন্তু মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর কথা বলতে গেলে যাদের নাম অবশ্যই নিতে হবে তারা হলেন চার্লস ডাউ,উইলিয়াম হ্যামিল্টন,এডসন গোউল্ড এবং আরো অনকে। মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিসে তারা মুল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি এনালাইসিস করে সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে ধারনা করা শুরু করেন।
ক্যান্ডেলস্টিক চার্টের জনক জাপানিজরা। এজন্য ক্যান্ডেলস্টিককে কখনো কখনো জাপানিজ ক্যান্ডেলস্টিক ও বলা হয়। প্রাচীন এই প্যাটার্ন এনালাইসিস ১৯৯০ সালের দিকে আমেরিকাতে জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
টেকনিকাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি :
একজন টেকনিক্যাল অ্যানালিস্ট মূলত প্রাইজের মুভমেন্ট, ট্রেন্ড এবং চার্ট প্যাটার্ন ব্যবহার করে মার্কেট সেন্টিমেন্ট বুঝার চেষ্টা করেন ।
ক. ডাউ তার টেকনিকাল এনালাইসি থিওরিতে বলেন চার্টের মধ্যে একটি শেয়ারের সকল ধরনের ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায়। মূলত চার্টকে তিনি পূর্ববর্তী ও বর্তমান প্রাইস জানার একটি মাধ্যমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করতে চান নি। ধরুন আগামীকাল একটি কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম খারাপ দিকে পরিচালিত হলো বা কোম্পানির কোনো কেলেঙ্কারি ফাঁস হলো বা কোম্পানি সম্পর্কিত একটি খারাপ নিউজ বের হলো এসবের কারণে কোম্পানির শেয়ারের দর পতন হবে তা খুবই স্বাভাবিক।
শেয়ার মার্কেট এনালাইসিস করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা প্রধানত যে দু’ধরনের এনালাইসিস ব্যবহার করে থাকেন একটি হচ্ছে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এবং অপরটি ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো পূর্বের মূল্যের গতিবিধি পর্যালোচনা করা ও এর উপর ভিত্তি করে বর্তমান ট্রেডিং কন্ডিশনে মূল্য কেমন মুভ করছে তা নির্ধারন করা এবং তা থেকে নিকট ভবিষ্যতের মূল্যের সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে একটা ধারণা নেওয়া।
টেকনিক্যাল এনালিস্টদের মূল বিশ্বাস এই যে মার্কেটের সকল ধরনের তথ্য মূল্যের মধ্যেই পাওয়া যায় এবং সংক্ষেপে বলতে গেলে তাদের ধারণা করে “যে সবকিছুই চার্টের মধ্যে রয়েছে ”
ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর মতন এখানে কোন কোম্পানির আর্থিকদিকগুলো বিশ্লেষণ করা হয় না ।
একজন বিনিয়োগকারী যদি টেকনিক্যাল এনালাইসিস এ দক্ষ হয় এবং আগের মার্কেট প্যাটার্ন গুলো শনাক্ত করতে পারেন তবে তিনি ভবিষ্যৎ দামের একটি ধারণা করতে পারবেন। টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো বিভিন্ন ধরনের চার্ট প্যাটার্ন যা একজন বিনিয়োগকারীকে ভবিষ্যতের মূল্য
সম্পর্কে অনুমান করতে সহায়তা করে।ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এনালাইসিস খুবই কার্যকরী।
আপনারা নিশ্চয়ই একটি প্রাচীন প্রবাদ শুনে থাকবেন “history tends to repeat itself”।এটিই টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর সারসংক্ষেপ কারণ টেকনিক্যাল এনালাইসিসের বিশ্বাস করা হয়েছে পূর্বে যেসব প্যাটার্ন তৈরি হওয়ার পর মার্কেট যেভাবে আচরণ করেছে ভবিষ্যতেও তা হওয়ার পর মার্কেট একই ভাবে আচরণ করবে।আপনি যদি সে সব প্যাটার্ন গুলো জানেন এবং চার্ট এর মধ্যে তা ধরতে পারেন তাহলে আপনি মূল্যের গতিবিধি সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন।চার্ট প্যাটার্ন গুলোর মূলে রয়েছে হিউম্যান সাইকোলজি যা সাধারণত পরিবর্তন হয় না তাই এগুলো সচরাচর পূর্বের মত কাজ করে থাকে।
ইতিহাস:
স্টক মার্কেটে টেকনিক্যাল এনালাইসিস কয়েকশ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৭ শতকের দিকে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর যাত্রা শুরু করেছিলেন ইউরোপে “Joseph De La Vega” ডাচ মার্কেট এনালাইসিস করতে গিয়ে। কিন্তু মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর কথা বলতে গেলে যাদের নাম অবশ্যই নিতে হবে তারা হলেন চার্লস ডাউ,উইলিয়াম হ্যামিল্টন,এডসন গোউল্ড এবং আরো অনকে। মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিসে তারা মুল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি এনালাইসিস করে সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে ধারনা করা শুরু করেন।
ক্যান্ডেলস্টিক চার্টের জনক জাপানিজরা। এজন্য ক্যান্ডেলস্টিককে কখনো কখনো জাপানিজ ক্যান্ডেলস্টিক ও বলা হয়। প্রাচীন এই প্যাটার্ন এনালাইসিস ১৯৯০ সালের দিকে আমেরিকাতে জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
টেকনিকাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি :
একজন টেকনিক্যাল অ্যানালিস্ট মূলত প্রাইজের মুভমেন্ট, ট্রেন্ড এবং চার্ট প্যাটার্ন ব্যবহার করে মার্কেট সেন্টিমেন্ট বুঝার চেষ্টা করেন ।
ক. ডাউ তার টেকনিকাল এনালাইসি থিওরিতে বলেন চার্টের মধ্যে একটি শেয়ারের সকল ধরনের ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায়। মূলত চার্টকে তিনি পূর্ববর্তী ও বর্তমান প্রাইস জানার একটি মাধ্যমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করতে চান নি। ধরুন আগামীকাল একটি কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম খারাপ দিকে পরিচালিত হলো বা কোম্পানির কোনো কেলেঙ্কারি ফাঁস হলো বা কোম্পানি সম্পর্কিত একটি খারাপ নিউজ বের হলো এসবের কারণে কোম্পানির শেয়ারের দর পতন হবে তা খুবই স্বাভাবিক।
ডাউ এর ভাষ্যমতে ভবিষ্যতের এ সম্ভাব্য ঘটনাবলী চার্টেই গাথা রয়েছে। কোন একটি কোম্পানির পূর্বের সকল ধরনের ঘটনার ফলাফল চার্টের মধ্যে বিদ্যমান এবং এসব কিছুকে নিয়েই চার্ট উঠানামা করে। তাই উনার মতে কোম্পানির বিভিন্ন ফান্ডামেন্টাল ও অর্থনৈতিক দিক নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে শুধু চার্ট এনালাইসিস করেই আপনি দাম সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন। উনি এও বলেন আপনি যদি শুরুতেই টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে একটা কোম্পানির শেয়ারের দাম সম্পর্কে ধারণা করেন এবং ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তাহলে আপনাকে আর সাথে অতিরিক্ত ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করার যৌক্তিকতা নেই কারণ ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর অন্তর্নিহিত বিষয়গুলো টেকনিক্যাল এনালাইসিসের চার্টের মধ্যে ফুটে উঠেছে বলেই প্রাইজে এভাবে মুভমেন্ট করছে।
খ. ১৯ শতকের দিকে ডাউ কিছু শেয়ারের মূল্য এনালাইসিস করতে গিয়ে লক্ষ করেন যে, শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদন কাজে জড়িত কিছু শেয়ারের মূল্য যখন বৃদ্ধি পায় সেইসাথে পরিবহনের সাথে জড়িত কোম্পানির শেয়ারগুলোর মূল্য বৃদ্ধি পায় ।ঘটনাটি বিশ্লেষণ করে ডাউ বলেন যে,এক শিল্পের শেয়ারগুলো শুধু বৃদ্ধি পায় না বরং উক্ত শিল্পের সাথে সম্পর্কিত শেয়ারগুলোর দাম বৃদ্ধি করতে প্রভাবিত করে এবং দুইটি শেয়ারের মূল্য যখন একইসাথে বৃদ্ধি পায় তখন একটি শক্তিশালী ট্রেন্ডের সৃষ্টি হয়।
যেসকল কোম্পানির শেয়ার একইসাথে মুভ করে সেসব কোম্পানির শেয়ার টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনি কার্যকরী ট্রেডিং সিদ্ধান্তে আসতে পারেন ।ধরে নিই A এবং B দুটি কোম্পানির শেয়ার একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং একইসাথে মুভ করে ।আপনি A কোম্পানির শেয়ারের টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে দেখলেন যে তা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।একই সাথে আপনি B কোম্পানির শেয়ার টেকনিকাল এনালাইসিস করে দেখলেন সেটিও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
যেহেতু দুইটি কোম্পানির শেয়ার একইসাথে মুভ করে এবং দুইটি কোম্পানি থেকে আপনি ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন তাই এই অ্যানালাইসিস থেকে প্রাপ্ত সিগনাল খুবই শক্তিশালী হয় ।
অনেক বিনিয়োগকারী এই ধরনের টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে নিম্নোক্তভাবে বিনিয়োগ করে থাকেন :
ধরেন একজন বিনিয়োগকারী ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করবেন।
এখন তিনি শুধুমাত্র A কোম্পানীতে ১০০০০ টাকা বিনিয়োগ না করে একই সাথে মুভমেন্ট করে এমন কোম্পানি B তেও ভাগ করে বিনিয়োগ করেন!
কোম্পানী A তে ৫০০০ এবং B তে ৫০০০। এভাবে বিনিয়োগ করার সুফল টা হল A কোম্পানী যদি কোনো কারণে আশানুরূপ রেজাল্ট না ও দেয় তাহলে ও আপনার B কোম্পানি থেকে ভালো লাভ করার সম্ভাবনা থাকতে পারে।কিন্তু আপনি শুধু একটি কোম্পনীতে বিনিয়োগ করলে আর তা থেকে আশানুরূপ রেজাল্ট না পেলে আপনার কিছুই করার থাকতো না।
গ. শেয়ারবাজারে একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম ওয়েভ বা ঢেউয়ের মতো ওঠানামা করে। এটি কখনোই শুধু সোজা উপরে উঠে যায় না বা সোজা নিচে নেমে যায় না।যখন একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম দীর্ঘ সময় ধরে উপরে উঠতে থাকে বা নিচে নামতে থাকে তখন তাকে ট্রেন্ড বলা হয়।
ডাউ থিউরি অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং স্বল্প মেয়াদী এই তিন ধরনের ট্রেন্ড হয়ে থাকে।
দীর্ঘমেয়াদী ট্রেন্ড সাধারণত এক বছর থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়,
মধ্যমেয়াদি ট্রেন্ড তিন সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় ,
স্বল্পমেয়াদী ট্রেন্ড তিন সপ্তাহ বা তার কম সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
একটি দীর্ঘমেয়াদি ট্রেন্ড সাধারণত কয়েকটি ছোট ছোট ট্রেন্ডের সমন্বয়ে গঠিত হয়।টেকনিক্যাল এনালাইসিস করার মূল লক্ষ্য হয়ে থাকে ট্রেন্ডের শুরু ও শেষ বুঝতে পারা। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় আপনি যদি ট্রেন্ড এর শুরু বুঝতে পেরে ট্রেন্ডের দিকে এন্ট্রি নেন আপনি ঐ ট্রেড থেকে থেকে অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের এর সুবিধা সমূহ:
১. টেকনিক্যাল এনালাইসিস কোম্পানির শেয়ারের মূল্যের গতিবিধি বুঝতে সহায়তা করে। কোম্পানির শেয়ারের মূল্য আপট্রেন্ডে রয়েছে নাকি ডাউনট্রেন্ডে রয়েছে নাকি একটি রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে তা বুঝতে সহায়তা করে।
শেয়ার মার্কেট এনালাইসিস করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা প্রধানত যে দু’ধরনের এনালাইসিস ব্যবহার করে থাকেন একটি হচ্ছে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এবং অপরটি ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো পূর্বের মূল্যের গতিবিধি পর্যালোচনা করা ও এর উপর ভিত্তি করে বর্তমান ট্রেডিং কন্ডিশনে মূল্য কেমন মুভ করছে তা নির্ধারন করা এবং তা থেকে নিকট ভবিষ্যতের মূল্যের সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে একটা ধারণা নেওয়া।
টেকনিক্যাল এনালিস্টদের মূল বিশ্বাস এই যে মার্কেটের সকল ধরনের তথ্য মূল্যের মধ্যেই পাওয়া যায় এবং সংক্ষেপে বলতে গেলে তাদের ধারণা করে “যে সবকিছুই চার্টের মধ্যে রয়েছে ”
ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর মতন এখানে কোন কোম্পানির আর্থিকদিকগুলো বিশ্লেষণ করা হয় না ।
একজন বিনিয়োগকারী যদি টেকনিক্যাল এনালাইসিস এ দক্ষ হয় এবং আগের মার্কেট প্যাটার্ন গুলো শনাক্ত করতে পারেন তবে তিনি ভবিষ্যৎ দামের একটি ধারণা করতে পারবেন। টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো বিভিন্ন ধরনের চার্ট প্যাটার্ন যা একজন বিনিয়োগকারীকে ভবিষ্যতের মূল্য
সম্পর্কে অনুমান করতে সহায়তা করে।ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এনালাইসিস খুবই কার্যকরী।
আপনারা নিশ্চয়ই একটি প্রাচীন প্রবাদ শুনে থাকবেন “history tends to repeat itself”।এটিই টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর সারসংক্ষেপ কারণ টেকনিক্যাল এনালাইসিসের বিশ্বাস করা হয়েছে পূর্বে যেসব প্যাটার্ন তৈরি হওয়ার পর মার্কেট যেভাবে আচরণ করেছে ভবিষ্যতেও তা হওয়ার পর মার্কেট একই ভাবে আচরণ করবে।আপনি যদি সে সব প্যাটার্ন গুলো জানেন এবং চার্ট এর মধ্যে তা ধরতে পারেন তাহলে আপনি মূল্যের গতিবিধি সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন।চার্ট প্যাটার্ন গুলোর মূলে রয়েছে হিউম্যান সাইকোলজি যা সাধারণত পরিবর্তন হয় না তাই এগুলো সচরাচর পূর্বের মত কাজ করে থাকে।
ইতিহাস:
স্টক মার্কেটে টেকনিক্যাল এনালাইসিস কয়েকশ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৭ শতকের দিকে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর যাত্রা শুরু করেছিলেন ইউরোপে “Joseph De La Vega” ডাচ মার্কেট এনালাইসিস করতে গিয়ে। কিন্তু মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর কথা বলতে গেলে যাদের নাম অবশ্যই নিতে হবে তারা হলেন চার্লস ডাউ,উইলিয়াম হ্যামিল্টন,এডসন গোউল্ড এবং আরো অনকে। মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিসে তারা মুল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি এনালাইসিস করে সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে ধারনা করা শুরু করেন।
ক্যান্ডেলস্টিক চার্টের জনক জাপানিজরা। এজন্য ক্যান্ডেলস্টিককে কখনো কখনো জাপানিজ ক্যান্ডেলস্টিক ও বলা হয়। প্রাচীন এই প্যাটার্ন এনালাইসিস ১৯৯০ সালের দিকে আমেরিকাতে জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
টেকনিকাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি :
একজন টেকনিক্যাল অ্যানালিস্ট মূলত প্রাইজের মুভমেন্ট, ট্রেন্ড এবং চার্ট প্যাটার্ন ব্যবহার করে মার্কেট সেন্টিমেন্ট বুঝার চেষ্টা করেন ।
ক. ডাউ তার টেকনিকাল এনালাইসি থিওরিতে বলেন চার্টের মধ্যে একটি শেয়ারের সকল ধরনের ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায়। মূলত চার্টকে তিনি পূর্ববর্তী ও বর্তমান প্রাইস জানার একটি মাধ্যমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করতে চান নি। ধরুন আগামীকাল একটি কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম খারাপ দিকে পরিচালিত হলো বা কোম্পানির কোনো কেলেঙ্কারি ফাঁস হলো বা কোম্পানি সম্পর্কিত একটি খারাপ নিউজ বের হলো এসবের কারণে কোম্পানির শেয়ারের দর পতন হবে তা খুবই স্বাভাবিক।
ডাউ এর ভাষ্যমতে ভবিষ্যতের এ সম্ভাব্য ঘটনাবলী চার্টেই গাথা রয়েছে। কোন একটি কোম্পানির পূর্বের সকল ধরনের ঘটনার ফলাফল চার্টের মধ্যে বিদ্যমান এবং এসব কিছুকে নিয়েই চার্ট উঠানামা করে। তাই উনার মতে কোম্পানির বিভিন্ন ফান্ডামেন্টাল ও অর্থনৈতিক দিক নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে শুধু চার্ট এনালাইসিস করেই আপনি দাম সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন। উনি এও বলেন আপনি যদি শুরুতেই টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে একটা কোম্পানির শেয়ারের দাম সম্পর্কে ধারণা করেন এবং ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তাহলে আপনাকে আর সাথে অতিরিক্ত ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করার যৌক্তিকতা নেই কারণ ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর অন্তর্নিহিত বিষয়গুলো টেকনিক্যাল এনালাইসিসের চার্টের মধ্যে ফুটে উঠেছে বলেই প্রাইজে এভাবে মুভমেন্ট করছে।
খ. ১৯ শতকের দিকে ডাউ কিছু শেয়ারের মূল্য এনালাইসিস করতে গিয়ে লক্ষ করেন যে, শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদন কাজে জড়িত কিছু শেয়ারের মূল্য যখন বৃদ্ধি পায় সেইসাথে পরিবহনের সাথে জড়িত কোম্পানির শেয়ারগুলোর মূল্য বৃদ্ধি পায় ।ঘটনাটি বিশ্লেষণ করে ডাউ বলেন যে,এক শিল্পের শেয়ারগুলো শুধু বৃদ্ধি পায় না বরং উক্ত শিল্পের সাথে সম্পর্কিত শেয়ারগুলোর দাম বৃদ্ধি করতে প্রভাবিত করে এবং দুইটি শেয়ারের মূল্য যখন একইসাথে বৃদ্ধি পায় তখন একটি শক্তিশালী ট্রেন্ডের সৃষ্টি হয়।
যেসকল কোম্পানির শেয়ার একইসাথে মুভ করে সেসব কোম্পানির শেয়ার টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনি কার্যকরী ট্রেডিং সিদ্ধান্তে আসতে পারেন ।ধরে নিই A এবং B দুটি কোম্পানির শেয়ার একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং একইসাথে মুভ করে ।আপনি A কোম্পানির শেয়ারের টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে দেখলেন যে তা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।একই সাথে আপনি B কোম্পানির শেয়ার টেকনিকাল এনালাইসিস করে দেখলেন সেটিও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
যেহেতু দুইটি কোম্পানির শেয়ার একইসাথে মুভ করে এবং দুইটি কোম্পানি থেকে আপনি ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন তাই এই অ্যানালাইসিস থেকে প্রাপ্ত সিগনাল খুবই শক্তিশালী হয় ।
অনেক বিনিয়োগকারী এই ধরনের টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে নিম্নোক্তভাবে বিনিয়োগ করে থাকেন :
ধরেন একজন বিনিয়োগকারী ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করবেন।
এখন তিনি শুধুমাত্র A কোম্পানীতে ১০০০০ টাকা বিনিয়োগ না করে একই সাথে মুভমেন্ট করে এমন কোম্পানি B তেও ভাগ করে বিনিয়োগ করেন!
কোম্পানী A তে ৫০০০ এবং B তে ৫০০০। এভাবে বিনিয়োগ করার সুফল টা হল A কোম্পানী যদি কোনো কারণে আশানুরূপ রেজাল্ট না ও দেয় তাহলে ও আপনার B কোম্পানি থেকে ভালো লাভ করার সম্ভাবনা থাকতে পারে।কিন্তু আপনি শুধু একটি কোম্পনীতে বিনিয়োগ করলে আর তা থেকে আশানুরূপ রেজাল্ট না পেলে আপনার কিছুই করার থাকতো না।
গ. শেয়ারবাজারে একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম ওয়েভ বা ঢেউয়ের মতো ওঠানামা করে। এটি কখনোই শুধু সোজা উপরে উঠে যায় না বা সোজা নিচে নেমে যায় না।যখন একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম দীর্ঘ সময় ধরে উপরে উঠতে থাকে বা নিচে নামতে থাকে তখন তাকে ট্রেন্ড বলা হয়।
ডাউ থিউরি অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং স্বল্প মেয়াদী এই তিন ধরনের ট্রেন্ড হয়ে থাকে।
দীর্ঘমেয়াদী ট্রেন্ড সাধারণত এক বছর থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়,
মধ্যমেয়াদি ট্রেন্ড তিন সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় ,
স্বল্পমেয়াদী ট্রেন্ড তিন সপ্তাহ বা তার কম সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
একটি দীর্ঘমেয়াদি ট্রেন্ড সাধারণত কয়েকটি ছোট ছোট ট্রেন্ডের সমন্বয়ে গঠিত হয়।টেকনিক্যাল এনালাইসিস করার মূল লক্ষ্য হয়ে থাকে ট্রেন্ডের শুরু ও শেষ বুঝতে পারা। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় আপনি যদি ট্রেন্ড এর শুরু বুঝতে পেরে ট্রেন্ডের দিকে এন্ট্রি নেন আপনি ঐ ট্রেড থেকে থেকে অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের এর সুবিধা সমূহ:
১. টেকনিক্যাল এনালাইসিস কোম্পানির শেয়ারের মূল্যের গতিবিধি বুঝতে সহায়তা করে। কোম্পানির শেয়ারের মূল্য আপট্রেন্ডে রয়েছে নাকি ডাউনট্রেন্ডে রয়েছে নাকি একটি রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে তা বুঝতে সহায়তা করে।
২. টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনি ভালো এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্ট বের করতে পারবেন।আপনি যদি একটি কোম্পানির শেয়ার কিনতে চান তা যেকোন জায়গা থেকে কিনলেই ভালো লাভ করতে পারবেন এরকম নয় ।টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনাকে একটি ভালো এন্ট্রিপয়েন্ট থেকে শেয়ার কিনতে হবে।এক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এনালিস্টরা এর ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন, সাপোর্ট রেজিস্ট্যান্স, সাপ্লাই ডিমান্ড জোন, চার্ট প্যাটার্ন, ট্রেন্ড লাইন, হার্মনিক প্যাটার্ন ও বিভিন্ন ধরনের ইন্ডিকেটর যেমন,মুভিং এভারেজ ইত্যাদির সহায়তা নিয়ে থাকে।
৩. টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস খুব দ্রুত করা যায় যেখানে ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করতে আপনাকে অনেক ধরনের ডাটা সংগ্রহ করতে হবে যার প্রক্রিয়া একটু জটিল ।কিন্তু আপনি টেকনিক্যাল এনালাইসিস একবার আয়ত্ত করতে পারলে খুব সহজেই যে কোন একটা চার্ট দেখে এবং কিছু ড্রইং এর মাধ্যমে খুব সহজে আপনার টেকনিক্যাল এনালাইসিস কম সময়ে সম্পন্ন করতে পারবেন
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের সীমাবদ্ধতা:
১. টেকনিক্যাল এনালাইসিস সব সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত দেবে এরকম নয় ।
২. টেকনিক্যাল এনালাইসিসের বিভিন্ন ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে নেয়া এন্ট্রি অনেক সময় ঠিকমতো কাজ করে না।
৩. নানা ধরনের ইন্ডিকেটর থাকায় অনেক সময় দেখা যায় কোন ইন্ডিকেটর বাই সিগন্যাল দিচ্ছে এবং কোন ইন্ডিকেটর সেল সিগন্যাল দিচ্ছে। নতুন একজন ট্রেডার এক্ষেত্রে কনফিউজড হয়ে যায় কোন ইন্ডিকেটর সিগনাল সিগনাল সঠিক এবং কোন ইন্ডিকেটর এর সিগন্যাল ভুল তা বুঝতে।
শেয়ার মার্কেট এনালাইসিস করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা প্রধানত যে দু’ধরনের এনালাইসিস ব্যবহার করে থাকেন একটি হচ্ছে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এবং অপরটি ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো পূর্বের মূল্যের গতিবিধি পর্যালোচনা করা ও এর উপর ভিত্তি করে বর্তমান ট্রেডিং কন্ডিশনে মূল্য কেমন মুভ করছে তা নির্ধারন করা এবং তা থেকে নিকট ভবিষ্যতের মূল্যের সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে একটা ধারণা নেওয়া।
টেকনিক্যাল এনালিস্টদের মূল বিশ্বাস এই যে মার্কেটের সকল ধরনের তথ্য মূল্যের মধ্যেই পাওয়া যায় এবং সংক্ষেপে বলতে গেলে তাদের ধারণা করে “যে সবকিছুই চার্টের মধ্যে রয়েছে ”
ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর মতন এখানে কোন কোম্পানির আর্থিকদিকগুলো বিশ্লেষণ করা হয় না ।
একজন বিনিয়োগকারী যদি টেকনিক্যাল এনালাইসিস এ দক্ষ হয় এবং আগের মার্কেট প্যাটার্ন গুলো শনাক্ত করতে পারেন তবে তিনি ভবিষ্যৎ দামের একটি ধারণা করতে পারবেন। টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো বিভিন্ন ধরনের চার্ট প্যাটার্ন যা একজন বিনিয়োগকারীকে ভবিষ্যতের মূল্য
সম্পর্কে অনুমান করতে সহায়তা করে।ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এনালাইসিস খুবই কার্যকরী।
আপনারা নিশ্চয়ই একটি প্রাচীন প্রবাদ শুনে থাকবেন “history tends to repeat itself”।এটিই টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর সারসংক্ষেপ কারণ টেকনিক্যাল এনালাইসিসের বিশ্বাস করা হয়েছে পূর্বে যেসব প্যাটার্ন তৈরি হওয়ার পর মার্কেট যেভাবে আচরণ করেছে ভবিষ্যতেও তা হওয়ার পর মার্কেট একই ভাবে আচরণ করবে।আপনি যদি সে সব প্যাটার্ন গুলো জানেন এবং চার্ট এর মধ্যে তা ধরতে পারেন তাহলে আপনি মূল্যের গতিবিধি সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন।চার্ট প্যাটার্ন গুলোর মূলে রয়েছে হিউম্যান সাইকোলজি যা সাধারণত পরিবর্তন হয় না তাই এগুলো সচরাচর পূর্বের মত কাজ করে থাকে।
ইতিহাস:
স্টক মার্কেটে টেকনিক্যাল এনালাইসিস কয়েকশ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৭ শতকের দিকে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর যাত্রা শুরু করেছিলেন ইউরোপে “Joseph De La Vega” ডাচ মার্কেট এনালাইসিস করতে গিয়ে। কিন্তু মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর কথা বলতে গেলে যাদের নাম অবশ্যই নিতে হবে তারা হলেন চার্লস ডাউ,উইলিয়াম হ্যামিল্টন,এডসন গোউল্ড এবং আরো অনকে। মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিসে তারা মুল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি এনালাইসিস করে সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে ধারনা করা শুরু করেন।
ক্যান্ডেলস্টিক চার্টের জনক জাপানিজরা। এজন্য ক্যান্ডেলস্টিককে কখনো কখনো জাপানিজ ক্যান্ডেলস্টিক ও বলা হয়। প্রাচীন এই প্যাটার্ন এনালাইসিস ১৯৯০ সালের দিকে আমেরিকাতে জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
টেকনিকাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি :
একজন টেকনিক্যাল অ্যানালিস্ট মূলত প্রাইজের মুভমেন্ট, ট্রেন্ড এবং চার্ট প্যাটার্ন ব্যবহার করে মার্কেট সেন্টিমেন্ট বুঝার চেষ্টা করেন ।
ক. ডাউ তার টেকনিকাল এনালাইসি থিওরিতে বলেন চার্টের মধ্যে একটি শেয়ারের সকল ধরনের ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায়। মূলত চার্টকে তিনি পূর্ববর্তী ও বর্তমান প্রাইস জানার একটি মাধ্যমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করতে চান নি। ধরুন আগামীকাল একটি কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম খারাপ দিকে পরিচালিত হলো বা কোম্পানির কোনো কেলেঙ্কারি ফাঁস হলো বা কোম্পানি সম্পর্কিত একটি খারাপ নিউজ বের হলো এসবের কারণে কোম্পানির শেয়ারের দর পতন হবে তা খুবই স্বাভাবিক।
ডাউ এর ভাষ্যমতে ভবিষ্যতের এ সম্ভাব্য ঘটনাবলী চার্টেই গাথা রয়েছে। কোন একটি কোম্পানির পূর্বের সকল ধরনের ঘটনার ফলাফল চার্টের মধ্যে বিদ্যমান এবং এসব কিছুকে নিয়েই চার্ট উঠানামা করে। তাই উনার মতে কোম্পানির বিভিন্ন ফান্ডামেন্টাল ও অর্থনৈতিক দিক নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে শুধু চার্ট এনালাইসিস করেই আপনি দাম সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন। উনি এও বলেন আপনি যদি শুরুতেই টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে একটা কোম্পানির শেয়ারের দাম সম্পর্কে ধারণা করেন এবং ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তাহলে আপনাকে আর সাথে অতিরিক্ত ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করার যৌক্তিকতা নেই কারণ ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর অন্তর্নিহিত বিষয়গুলো টেকনিক্যাল এনালাইসিসের চার্টের মধ্যে ফুটে উঠেছে বলেই প্রাইজে এভাবে মুভমেন্ট করছে।
খ. ১৯ শতকের দিকে ডাউ কিছু শেয়ারের মূল্য এনালাইসিস করতে গিয়ে লক্ষ করেন যে, শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদন কাজে জড়িত কিছু শেয়ারের মূল্য যখন বৃদ্ধি পায় সেইসাথে পরিবহনের সাথে জড়িত কোম্পানির শেয়ারগুলোর মূল্য বৃদ্ধি পায় ।ঘটনাটি বিশ্লেষণ করে ডাউ বলেন যে,এক শিল্পের শেয়ারগুলো শুধু বৃদ্ধি পায় না বরং উক্ত শিল্পের সাথে সম্পর্কিত শেয়ারগুলোর দাম বৃদ্ধি করতে প্রভাবিত করে এবং দুইটি শেয়ারের মূল্য যখন একইসাথে বৃদ্ধি পায় তখন একটি শক্তিশালী ট্রেন্ডের সৃষ্টি হয়।
যেসকল কোম্পানির শেয়ার একইসাথে মুভ করে সেসব কোম্পানির শেয়ার টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনি কার্যকরী ট্রেডিং সিদ্ধান্তে আসতে পারেন ।ধরে নিই A এবং B দুটি কোম্পানির শেয়ার একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং একইসাথে মুভ করে ।আপনি A কোম্পানির শেয়ারের টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে দেখলেন যে তা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।একই সাথে আপনি B কোম্পানির শেয়ার টেকনিকাল এনালাইসিস করে দেখলেন সেটিও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
যেহেতু দুইটি কোম্পানির শেয়ার একইসাথে মুভ করে এবং দুইটি কোম্পানি থেকে আপনি ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন তাই এই অ্যানালাইসিস থেকে প্রাপ্ত সিগনাল খুবই শক্তিশালী হয় ।
অনেক বিনিয়োগকারী এই ধরনের টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে নিম্নোক্তভাবে বিনিয়োগ করে থাকেন :
ধরেন একজন বিনিয়োগকারী ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করবেন।
এখন তিনি শুধুমাত্র A কোম্পানীতে ১০০০০ টাকা বিনিয়োগ না করে একই সাথে মুভমেন্ট করে এমন কোম্পানি B তেও ভাগ করে বিনিয়োগ করেন!
কোম্পানী A তে ৫০০০ এবং B তে ৫০০০। এভাবে বিনিয়োগ করার সুফল টা হল A কোম্পানী যদি কোনো কারণে আশানুরূপ রেজাল্ট না ও দেয় তাহলে ও আপনার B কোম্পানি থেকে ভালো লাভ করার সম্ভাবনা থাকতে পারে।কিন্তু আপনি শুধু একটি কোম্পনীতে বিনিয়োগ করলে আর তা থেকে আশানুরূপ রেজাল্ট না পেলে আপনার কিছুই করার থাকতো না।
গ. শেয়ারবাজারে একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম ওয়েভ বা ঢেউয়ের মতো ওঠানামা করে। এটি কখনোই শুধু সোজা উপরে উঠে যায় না বা সোজা নিচে নেমে যায় না।যখন একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম দীর্ঘ সময় ধরে উপরে উঠতে থাকে বা নিচে নামতে থাকে তখন তাকে ট্রেন্ড বলা হয়।
ডাউ থিউরি অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং স্বল্প মেয়াদী এই তিন ধরনের ট্রেন্ড হয়ে থাকে।
দীর্ঘমেয়াদী ট্রেন্ড সাধারণত এক বছর থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়,
মধ্যমেয়াদি ট্রেন্ড তিন সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় ,
স্বল্পমেয়াদী ট্রেন্ড তিন সপ্তাহ বা তার কম সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
একটি দীর্ঘমেয়াদি ট্রেন্ড সাধারণত কয়েকটি ছোট ছোট ট্রেন্ডের সমন্বয়ে গঠিত হয়।টেকনিক্যাল এনালাইসিস করার মূল লক্ষ্য হয়ে থাকে ট্রেন্ডের শুরু ও শেষ বুঝতে পারা। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় আপনি যদি ট্রেন্ড এর শুরু বুঝতে পেরে ট্রেন্ডের দিকে এন্ট্রি নেন আপনি ঐ ট্রেড থেকে থেকে অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের এর সুবিধা সমূহ:
১. টেকনিক্যাল এনালাইসিস কোম্পানির শেয়ারের মূল্যের গতিবিধি বুঝতে সহায়তা করে। কোম্পানির শেয়ারের মূল্য আপট্রেন্ডে রয়েছে নাকি ডাউনট্রেন্ডে রয়েছে নাকি একটি রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে তা বুঝতে সহায়তা করে।
২. টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনি ভালো এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্ট বের করতে পারবেন।আপনি যদি একটি কোম্পানির শেয়ার কিনতে চান তা যেকোন জায়গা থেকে কিনলেই ভালো লাভ করতে পারবেন এরকম নয় ।টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনাকে একটি ভালো এন্ট্রিপয়েন্ট থেকে শেয়ার কিনতে হবে।এক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এনালিস্টরা এর ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন, সাপোর্ট রেজিস্ট্যান্স, সাপ্লাই ডিমান্ড জোন, চার্ট প্যাটার্ন, ট্রেন্ড লাইন, হার্মনিক প্যাটার্ন ও বিভিন্ন ধরনের ইন্ডিকেটর যেমন,মুভিং এভারেজ ইত্যাদির সহায়তা নিয়ে থাকে।
৩. টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস খুব দ্রুত করা যায় যেখানে ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করতে আপনাকে অনেক ধরনের ডাটা সংগ্রহ করতে হবে যার প্রক্রিয়া একটু জটিল ।কিন্তু আপনি টেকনিক্যাল এনালাইসিস একবার আয়ত্ত করতে পারলে খুব সহজেই যে কোন একটা চার্ট দেখে এবং কিছু ড্রইং এর মাধ্যমে খুব সহজে আপনার টেকনিক্যাল এনালাইসিস কম সময়ে সম্পন্ন করতে পারবেন
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের সীমাবদ্ধতা:
১. টেকনিক্যাল এনালাইসিস সব সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত দেবে এরকম নয় ।
২. টেকনিক্যাল এনালাইসিসের বিভিন্ন ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে নেয়া এন্ট্রি অনেক সময় ঠিকমতো কাজ করে না।
৩. নানা ধরনের ইন্ডিকেটর থাকায় অনেক সময় দেখা যায় কোন ইন্ডিকেটর বাই সিগন্যাল দিচ্ছে এবং কোন ইন্ডিকেটর সেল সিগন্যাল দিচ্ছে। নতুন একজন ট্রেডার এক্ষেত্রে কনফিউজড হয়ে যায় কোন ইন্ডিকেটর সিগনাল সিগনাল সঠিক এবং কোন ইন্ডিকেটর এর সিগন্যাল ভুল তা বুঝতে।
৪. একাধিক বিনিয়োগকারীর টেকনিক্যাল এনালাইসিস অনেক সময় এ্করকম হয়না। এরকম দেখা যায় যে টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে কেউ বাই করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এখানে অপরজন জন সেল করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে আপনার ট্রেড থেকে আপনি কতটুকু লাভ করতে পারবেন তা নির্ভর করবে আপনার টেকনিক্যাল এনালাইসিসের দক্ষতার উপর।
টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস একজন বিনিয়োগকারীকে মার্কেটের ট্রেন্ড বুঝতে এবং ভালো এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্ট বের করতে সাহায্য করে তাই এর বিকল্প নেই।সর্বোপরি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশিত মুনাফা অর্জনে ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর পাশাপাশি টেকনিক্যাল এনালাইসিস অপরিহার্য ভূমিকা রাখে।