এর প্রথম লক্ষ ও উদ্দেশ্য হলো: বিভিন্ন কম্পানির ব্যাবসা বাড়াতে সাধারন পাবলিকের কাছ থেকে আইপিওর মাধ্যমে টাকা নিয়ে থাকে।এতে করে ব্যবসার জন্য প্রয়োজনীয় টাকার চাহিদা পুরন হয়।এবং ব্যবসা আরও সুন্দর ভাবে করা যায়।
দ্বিতীয় লক্ষ ও উদ্দেশ্য হলো: সাধারন বিনিয়োগ কারি যারা নিজ ইচছায় বিনিয়োগ করতে চায় এবং তারা তাদের পছন্দের কম্পানির শেয়ার কিনতে পারে।এর ফলে উদ্যোকতা ও বিনিয়োগকারি উভয়ের লাভ হয়।
Author: selim
শেয়ার মার্কেট এনালাইসিস করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা প্রধানত যে দু’ধরনের এনালাইসিস ব্যবহার করে থাকেন একটি হচ্ছে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এবং অপরটি ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো পূর্বের মূল্যের গতিবিধি পর্যালোচনা করা ও এর উপর ভিত্তি করে বর্তমান ট্রেডিং কন্ডিশনে মূল্য কেমন মুভ করছে তা নির্ধারন করা এবং তা থেকে নিকট ভবিষ্যতের মূল্যের সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে একটা ধারণা নেওয়া।
টেকনিক্যাল এনালিস্টদের মূল বিশ্বাস এই যে মার্কেটের সকল ধরনের তথ্য মূল্যের মধ্যেই পাওয়া যায় এবং সংক্ষেপে বলতে গেলে তাদের ধারণা করে “যে সবকিছুই চার্টের মধ্যে রয়েছে ”
ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর মতন এখানে কোন কোম্পানির আর্থিকদিকগুলো বিশ্লেষণ করা হয় না ।
একজন বিনিয়োগকারী যদি টেকনিক্যাল এনালাইসিস এ দক্ষ হয় এবং আগের মার্কেট প্যাটার্ন গুলো শনাক্ত করতে পারেন তবে তিনি ভবিষ্যৎ দামের একটি ধারণা করতে পারবেন। টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো বিভিন্ন ধরনের চার্ট প্যাটার্ন যা একজন বিনিয়োগকারীকে ভবিষ্যতের মূল্য
সম্পর্কে অনুমান করতে সহায়তা করে।ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এনালাইসিস খুবই কার্যকরী।
আপনারা নিশ্চয়ই একটি প্রাচীন প্রবাদ শুনে থাকবেন “history tends to repeat itself”।এটিই টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর সারসংক্ষেপ কারণ টেকনিক্যাল এনালাইসিসের বিশ্বাস করা হয়েছে পূর্বে যেসব প্যাটার্ন তৈরি হওয়ার পর মার্কেট যেভাবে আচরণ করেছে ভবিষ্যতেও তা হওয়ার পর মার্কেট একই ভাবে আচরণ করবে।আপনি যদি সে সব প্যাটার্ন গুলো জানেন এবং চার্ট এর মধ্যে তা ধরতে পারেন তাহলে আপনি মূল্যের গতিবিধি সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন।চার্ট প্যাটার্ন গুলোর মূলে রয়েছে হিউম্যান সাইকোলজি যা সাধারণত পরিবর্তন হয় না তাই এগুলো সচরাচর পূর্বের মত কাজ করে থাকে।
ইতিহাস:
স্টক মার্কেটে টেকনিক্যাল এনালাইসিস কয়েকশ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৭ শতকের দিকে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর যাত্রা শুরু করেছিলেন ইউরোপে “Joseph De La Vega” ডাচ মার্কেট এনালাইসিস করতে গিয়ে। কিন্তু মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর কথা বলতে গেলে যাদের নাম অবশ্যই নিতে হবে তারা হলেন চার্লস ডাউ,উইলিয়াম হ্যামিল্টন,এডসন গোউল্ড এবং আরো অনকে। মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিসে তারা মুল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি এনালাইসিস করে সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে ধারনা করা শুরু করেন।
ক্যান্ডেলস্টিক চার্টের জনক জাপানিজরা। এজন্য ক্যান্ডেলস্টিককে কখনো কখনো জাপানিজ ক্যান্ডেলস্টিক ও বলা হয়। প্রাচীন এই প্যাটার্ন এনালাইসিস ১৯৯০ সালের দিকে আমেরিকাতে জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
টেকনিকাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি :
একজন টেকনিক্যাল অ্যানালিস্ট মূলত প্রাইজের মুভমেন্ট, ট্রেন্ড এবং চার্ট প্যাটার্ন ব্যবহার করে মার্কেট সেন্টিমেন্ট বুঝার চেষ্টা করেন ।
ক. ডাউ তার টেকনিকাল এনালাইসি থিওরিতে বলেন চার্টের মধ্যে একটি শেয়ারের সকল ধরনের ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায়। মূলত চার্টকে তিনি পূর্ববর্তী ও বর্তমান প্রাইস জানার একটি মাধ্যমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করতে চান নি। ধরুন আগামীকাল একটি কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম খারাপ দিকে পরিচালিত হলো বা কোম্পানির কোনো কেলেঙ্কারি ফাঁস হলো বা কোম্পানি সম্পর্কিত একটি খারাপ নিউজ বের হলো এসবের কারণে কোম্পানির শেয়ারের দর পতন হবে তা খুবই স্বাভাবিক।
শেয়ার মার্কেট এনালাইসিস করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা প্রধানত যে দু’ধরনের এনালাইসিস ব্যবহার করে থাকেন একটি হচ্ছে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এবং অপরটি ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো পূর্বের মূল্যের গতিবিধি পর্যালোচনা করা ও এর উপর ভিত্তি করে বর্তমান ট্রেডিং কন্ডিশনে মূল্য কেমন মুভ করছে তা নির্ধারন করা এবং তা থেকে নিকট ভবিষ্যতের মূল্যের সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে একটা ধারণা নেওয়া।
টেকনিক্যাল এনালিস্টদের মূল বিশ্বাস এই যে মার্কেটের সকল ধরনের তথ্য মূল্যের মধ্যেই পাওয়া যায় এবং সংক্ষেপে বলতে গেলে তাদের ধারণা করে “যে সবকিছুই চার্টের মধ্যে রয়েছে ”
ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর মতন এখানে কোন কোম্পানির আর্থিকদিকগুলো বিশ্লেষণ করা হয় না ।
একজন বিনিয়োগকারী যদি টেকনিক্যাল এনালাইসিস এ দক্ষ হয় এবং আগের মার্কেট প্যাটার্ন গুলো শনাক্ত করতে পারেন তবে তিনি ভবিষ্যৎ দামের একটি ধারণা করতে পারবেন। টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো বিভিন্ন ধরনের চার্ট প্যাটার্ন যা একজন বিনিয়োগকারীকে ভবিষ্যতের মূল্য
সম্পর্কে অনুমান করতে সহায়তা করে।ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এনালাইসিস খুবই কার্যকরী।
আপনারা নিশ্চয়ই একটি প্রাচীন প্রবাদ শুনে থাকবেন “history tends to repeat itself”।এটিই টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর সারসংক্ষেপ কারণ টেকনিক্যাল এনালাইসিসের বিশ্বাস করা হয়েছে পূর্বে যেসব প্যাটার্ন তৈরি হওয়ার পর মার্কেট যেভাবে আচরণ করেছে ভবিষ্যতেও তা হওয়ার পর মার্কেট একই ভাবে আচরণ করবে।আপনি যদি সে সব প্যাটার্ন গুলো জানেন এবং চার্ট এর মধ্যে তা ধরতে পারেন তাহলে আপনি মূল্যের গতিবিধি সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন।চার্ট প্যাটার্ন গুলোর মূলে রয়েছে হিউম্যান সাইকোলজি যা সাধারণত পরিবর্তন হয় না তাই এগুলো সচরাচর পূর্বের মত কাজ করে থাকে।
ইতিহাস:
স্টক মার্কেটে টেকনিক্যাল এনালাইসিস কয়েকশ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৭ শতকের দিকে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর যাত্রা শুরু করেছিলেন ইউরোপে “Joseph De La Vega” ডাচ মার্কেট এনালাইসিস করতে গিয়ে। কিন্তু মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর কথা বলতে গেলে যাদের নাম অবশ্যই নিতে হবে তারা হলেন চার্লস ডাউ,উইলিয়াম হ্যামিল্টন,এডসন গোউল্ড এবং আরো অনকে। মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিসে তারা মুল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি এনালাইসিস করে সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে ধারনা করা শুরু করেন।
ক্যান্ডেলস্টিক চার্টের জনক জাপানিজরা। এজন্য ক্যান্ডেলস্টিককে কখনো কখনো জাপানিজ ক্যান্ডেলস্টিক ও বলা হয়। প্রাচীন এই প্যাটার্ন এনালাইসিস ১৯৯০ সালের দিকে আমেরিকাতে জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
টেকনিকাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি :
একজন টেকনিক্যাল অ্যানালিস্ট মূলত প্রাইজের মুভমেন্ট, ট্রেন্ড এবং চার্ট প্যাটার্ন ব্যবহার করে মার্কেট সেন্টিমেন্ট বুঝার চেষ্টা করেন ।
ক. ডাউ তার টেকনিকাল এনালাইসি থিওরিতে বলেন চার্টের মধ্যে একটি শেয়ারের সকল ধরনের ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায়। মূলত চার্টকে তিনি পূর্ববর্তী ও বর্তমান প্রাইস জানার একটি মাধ্যমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করতে চান নি। ধরুন আগামীকাল একটি কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম খারাপ দিকে পরিচালিত হলো বা কোম্পানির কোনো কেলেঙ্কারি ফাঁস হলো বা কোম্পানি সম্পর্কিত একটি খারাপ নিউজ বের হলো এসবের কারণে কোম্পানির শেয়ারের দর পতন হবে তা খুবই স্বাভাবিক।
ডাউ এর ভাষ্যমতে ভবিষ্যতের এ সম্ভাব্য ঘটনাবলী চার্টেই গাথা রয়েছে। কোন একটি কোম্পানির পূর্বের সকল ধরনের ঘটনার ফলাফল চার্টের মধ্যে বিদ্যমান এবং এসব কিছুকে নিয়েই চার্ট উঠানামা করে। তাই উনার মতে কোম্পানির বিভিন্ন ফান্ডামেন্টাল ও অর্থনৈতিক দিক নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে শুধু চার্ট এনালাইসিস করেই আপনি দাম সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন। উনি এও বলেন আপনি যদি শুরুতেই টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে একটা কোম্পানির শেয়ারের দাম সম্পর্কে ধারণা করেন এবং ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তাহলে আপনাকে আর সাথে অতিরিক্ত ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করার যৌক্তিকতা নেই কারণ ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর অন্তর্নিহিত বিষয়গুলো টেকনিক্যাল এনালাইসিসের চার্টের মধ্যে ফুটে উঠেছে বলেই প্রাইজে এভাবে মুভমেন্ট করছে।
খ. ১৯ শতকের দিকে ডাউ কিছু শেয়ারের মূল্য এনালাইসিস করতে গিয়ে লক্ষ করেন যে, শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদন কাজে জড়িত কিছু শেয়ারের মূল্য যখন বৃদ্ধি পায় সেইসাথে পরিবহনের সাথে জড়িত কোম্পানির শেয়ারগুলোর মূল্য বৃদ্ধি পায় ।ঘটনাটি বিশ্লেষণ করে ডাউ বলেন যে,এক শিল্পের শেয়ারগুলো শুধু বৃদ্ধি পায় না বরং উক্ত শিল্পের সাথে সম্পর্কিত শেয়ারগুলোর দাম বৃদ্ধি করতে প্রভাবিত করে এবং দুইটি শেয়ারের মূল্য যখন একইসাথে বৃদ্ধি পায় তখন একটি শক্তিশালী ট্রেন্ডের সৃষ্টি হয়।
যেসকল কোম্পানির শেয়ার একইসাথে মুভ করে সেসব কোম্পানির শেয়ার টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনি কার্যকরী ট্রেডিং সিদ্ধান্তে আসতে পারেন ।ধরে নিই A এবং B দুটি কোম্পানির শেয়ার একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং একইসাথে মুভ করে ।আপনি A কোম্পানির শেয়ারের টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে দেখলেন যে তা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।একই সাথে আপনি B কোম্পানির শেয়ার টেকনিকাল এনালাইসিস করে দেখলেন সেটিও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
যেহেতু দুইটি কোম্পানির শেয়ার একইসাথে মুভ করে এবং দুইটি কোম্পানি থেকে আপনি ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন তাই এই অ্যানালাইসিস থেকে প্রাপ্ত সিগনাল খুবই শক্তিশালী হয় ।
অনেক বিনিয়োগকারী এই ধরনের টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে নিম্নোক্তভাবে বিনিয়োগ করে থাকেন :
ধরেন একজন বিনিয়োগকারী ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করবেন।
এখন তিনি শুধুমাত্র A কোম্পানীতে ১০০০০ টাকা বিনিয়োগ না করে একই সাথে মুভমেন্ট করে এমন কোম্পানি B তেও ভাগ করে বিনিয়োগ করেন!
কোম্পানী A তে ৫০০০ এবং B তে ৫০০০। এভাবে বিনিয়োগ করার সুফল টা হল A কোম্পানী যদি কোনো কারণে আশানুরূপ রেজাল্ট না ও দেয় তাহলে ও আপনার B কোম্পানি থেকে ভালো লাভ করার সম্ভাবনা থাকতে পারে।কিন্তু আপনি শুধু একটি কোম্পনীতে বিনিয়োগ করলে আর তা থেকে আশানুরূপ রেজাল্ট না পেলে আপনার কিছুই করার থাকতো না।
গ. শেয়ারবাজারে একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম ওয়েভ বা ঢেউয়ের মতো ওঠানামা করে। এটি কখনোই শুধু সোজা উপরে উঠে যায় না বা সোজা নিচে নেমে যায় না।যখন একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম দীর্ঘ সময় ধরে উপরে উঠতে থাকে বা নিচে নামতে থাকে তখন তাকে ট্রেন্ড বলা হয়।
ডাউ থিউরি অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং স্বল্প মেয়াদী এই তিন ধরনের ট্রেন্ড হয়ে থাকে।
দীর্ঘমেয়াদী ট্রেন্ড সাধারণত এক বছর থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়,
মধ্যমেয়াদি ট্রেন্ড তিন সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় ,
স্বল্পমেয়াদী ট্রেন্ড তিন সপ্তাহ বা তার কম সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
একটি দীর্ঘমেয়াদি ট্রেন্ড সাধারণত কয়েকটি ছোট ছোট ট্রেন্ডের সমন্বয়ে গঠিত হয়।টেকনিক্যাল এনালাইসিস করার মূল লক্ষ্য হয়ে থাকে ট্রেন্ডের শুরু ও শেষ বুঝতে পারা। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় আপনি যদি ট্রেন্ড এর শুরু বুঝতে পেরে ট্রেন্ডের দিকে এন্ট্রি নেন আপনি ঐ ট্রেড থেকে থেকে অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের এর সুবিধা সমূহ:
১. টেকনিক্যাল এনালাইসিস কোম্পানির শেয়ারের মূল্যের গতিবিধি বুঝতে সহায়তা করে। কোম্পানির শেয়ারের মূল্য আপট্রেন্ডে রয়েছে নাকি ডাউনট্রেন্ডে রয়েছে নাকি একটি রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে তা বুঝতে সহায়তা করে।
শেয়ার মার্কেট এনালাইসিস করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা প্রধানত যে দু’ধরনের এনালাইসিস ব্যবহার করে থাকেন একটি হচ্ছে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এবং অপরটি ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো পূর্বের মূল্যের গতিবিধি পর্যালোচনা করা ও এর উপর ভিত্তি করে বর্তমান ট্রেডিং কন্ডিশনে মূল্য কেমন মুভ করছে তা নির্ধারন করা এবং তা থেকে নিকট ভবিষ্যতের মূল্যের সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে একটা ধারণা নেওয়া।
টেকনিক্যাল এনালিস্টদের মূল বিশ্বাস এই যে মার্কেটের সকল ধরনের তথ্য মূল্যের মধ্যেই পাওয়া যায় এবং সংক্ষেপে বলতে গেলে তাদের ধারণা করে “যে সবকিছুই চার্টের মধ্যে রয়েছে ”
ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর মতন এখানে কোন কোম্পানির আর্থিকদিকগুলো বিশ্লেষণ করা হয় না ।
একজন বিনিয়োগকারী যদি টেকনিক্যাল এনালাইসিস এ দক্ষ হয় এবং আগের মার্কেট প্যাটার্ন গুলো শনাক্ত করতে পারেন তবে তিনি ভবিষ্যৎ দামের একটি ধারণা করতে পারবেন। টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো বিভিন্ন ধরনের চার্ট প্যাটার্ন যা একজন বিনিয়োগকারীকে ভবিষ্যতের মূল্য
সম্পর্কে অনুমান করতে সহায়তা করে।ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এনালাইসিস খুবই কার্যকরী।
আপনারা নিশ্চয়ই একটি প্রাচীন প্রবাদ শুনে থাকবেন “history tends to repeat itself”।এটিই টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর সারসংক্ষেপ কারণ টেকনিক্যাল এনালাইসিসের বিশ্বাস করা হয়েছে পূর্বে যেসব প্যাটার্ন তৈরি হওয়ার পর মার্কেট যেভাবে আচরণ করেছে ভবিষ্যতেও তা হওয়ার পর মার্কেট একই ভাবে আচরণ করবে।আপনি যদি সে সব প্যাটার্ন গুলো জানেন এবং চার্ট এর মধ্যে তা ধরতে পারেন তাহলে আপনি মূল্যের গতিবিধি সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন।চার্ট প্যাটার্ন গুলোর মূলে রয়েছে হিউম্যান সাইকোলজি যা সাধারণত পরিবর্তন হয় না তাই এগুলো সচরাচর পূর্বের মত কাজ করে থাকে।
ইতিহাস:
স্টক মার্কেটে টেকনিক্যাল এনালাইসিস কয়েকশ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৭ শতকের দিকে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর যাত্রা শুরু করেছিলেন ইউরোপে “Joseph De La Vega” ডাচ মার্কেট এনালাইসিস করতে গিয়ে। কিন্তু মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর কথা বলতে গেলে যাদের নাম অবশ্যই নিতে হবে তারা হলেন চার্লস ডাউ,উইলিয়াম হ্যামিল্টন,এডসন গোউল্ড এবং আরো অনকে। মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিসে তারা মুল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি এনালাইসিস করে সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে ধারনা করা শুরু করেন।
ক্যান্ডেলস্টিক চার্টের জনক জাপানিজরা। এজন্য ক্যান্ডেলস্টিককে কখনো কখনো জাপানিজ ক্যান্ডেলস্টিক ও বলা হয়। প্রাচীন এই প্যাটার্ন এনালাইসিস ১৯৯০ সালের দিকে আমেরিকাতে জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
টেকনিকাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি :
একজন টেকনিক্যাল অ্যানালিস্ট মূলত প্রাইজের মুভমেন্ট, ট্রেন্ড এবং চার্ট প্যাটার্ন ব্যবহার করে মার্কেট সেন্টিমেন্ট বুঝার চেষ্টা করেন ।
ক. ডাউ তার টেকনিকাল এনালাইসি থিওরিতে বলেন চার্টের মধ্যে একটি শেয়ারের সকল ধরনের ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায়। মূলত চার্টকে তিনি পূর্ববর্তী ও বর্তমান প্রাইস জানার একটি মাধ্যমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করতে চান নি। ধরুন আগামীকাল একটি কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম খারাপ দিকে পরিচালিত হলো বা কোম্পানির কোনো কেলেঙ্কারি ফাঁস হলো বা কোম্পানি সম্পর্কিত একটি খারাপ নিউজ বের হলো এসবের কারণে কোম্পানির শেয়ারের দর পতন হবে তা খুবই স্বাভাবিক।
ডাউ এর ভাষ্যমতে ভবিষ্যতের এ সম্ভাব্য ঘটনাবলী চার্টেই গাথা রয়েছে। কোন একটি কোম্পানির পূর্বের সকল ধরনের ঘটনার ফলাফল চার্টের মধ্যে বিদ্যমান এবং এসব কিছুকে নিয়েই চার্ট উঠানামা করে। তাই উনার মতে কোম্পানির বিভিন্ন ফান্ডামেন্টাল ও অর্থনৈতিক দিক নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে শুধু চার্ট এনালাইসিস করেই আপনি দাম সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন। উনি এও বলেন আপনি যদি শুরুতেই টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে একটা কোম্পানির শেয়ারের দাম সম্পর্কে ধারণা করেন এবং ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তাহলে আপনাকে আর সাথে অতিরিক্ত ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করার যৌক্তিকতা নেই কারণ ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর অন্তর্নিহিত বিষয়গুলো টেকনিক্যাল এনালাইসিসের চার্টের মধ্যে ফুটে উঠেছে বলেই প্রাইজে এভাবে মুভমেন্ট করছে।
খ. ১৯ শতকের দিকে ডাউ কিছু শেয়ারের মূল্য এনালাইসিস করতে গিয়ে লক্ষ করেন যে, শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদন কাজে জড়িত কিছু শেয়ারের মূল্য যখন বৃদ্ধি পায় সেইসাথে পরিবহনের সাথে জড়িত কোম্পানির শেয়ারগুলোর মূল্য বৃদ্ধি পায় ।ঘটনাটি বিশ্লেষণ করে ডাউ বলেন যে,এক শিল্পের শেয়ারগুলো শুধু বৃদ্ধি পায় না বরং উক্ত শিল্পের সাথে সম্পর্কিত শেয়ারগুলোর দাম বৃদ্ধি করতে প্রভাবিত করে এবং দুইটি শেয়ারের মূল্য যখন একইসাথে বৃদ্ধি পায় তখন একটি শক্তিশালী ট্রেন্ডের সৃষ্টি হয়।
যেসকল কোম্পানির শেয়ার একইসাথে মুভ করে সেসব কোম্পানির শেয়ার টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনি কার্যকরী ট্রেডিং সিদ্ধান্তে আসতে পারেন ।ধরে নিই A এবং B দুটি কোম্পানির শেয়ার একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং একইসাথে মুভ করে ।আপনি A কোম্পানির শেয়ারের টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে দেখলেন যে তা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।একই সাথে আপনি B কোম্পানির শেয়ার টেকনিকাল এনালাইসিস করে দেখলেন সেটিও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
যেহেতু দুইটি কোম্পানির শেয়ার একইসাথে মুভ করে এবং দুইটি কোম্পানি থেকে আপনি ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন তাই এই অ্যানালাইসিস থেকে প্রাপ্ত সিগনাল খুবই শক্তিশালী হয় ।
অনেক বিনিয়োগকারী এই ধরনের টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে নিম্নোক্তভাবে বিনিয়োগ করে থাকেন :
ধরেন একজন বিনিয়োগকারী ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করবেন।
এখন তিনি শুধুমাত্র A কোম্পানীতে ১০০০০ টাকা বিনিয়োগ না করে একই সাথে মুভমেন্ট করে এমন কোম্পানি B তেও ভাগ করে বিনিয়োগ করেন!
কোম্পানী A তে ৫০০০ এবং B তে ৫০০০। এভাবে বিনিয়োগ করার সুফল টা হল A কোম্পানী যদি কোনো কারণে আশানুরূপ রেজাল্ট না ও দেয় তাহলে ও আপনার B কোম্পানি থেকে ভালো লাভ করার সম্ভাবনা থাকতে পারে।কিন্তু আপনি শুধু একটি কোম্পনীতে বিনিয়োগ করলে আর তা থেকে আশানুরূপ রেজাল্ট না পেলে আপনার কিছুই করার থাকতো না।
গ. শেয়ারবাজারে একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম ওয়েভ বা ঢেউয়ের মতো ওঠানামা করে। এটি কখনোই শুধু সোজা উপরে উঠে যায় না বা সোজা নিচে নেমে যায় না।যখন একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম দীর্ঘ সময় ধরে উপরে উঠতে থাকে বা নিচে নামতে থাকে তখন তাকে ট্রেন্ড বলা হয়।
ডাউ থিউরি অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং স্বল্প মেয়াদী এই তিন ধরনের ট্রেন্ড হয়ে থাকে।
দীর্ঘমেয়াদী ট্রেন্ড সাধারণত এক বছর থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়,
মধ্যমেয়াদি ট্রেন্ড তিন সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় ,
স্বল্পমেয়াদী ট্রেন্ড তিন সপ্তাহ বা তার কম সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
একটি দীর্ঘমেয়াদি ট্রেন্ড সাধারণত কয়েকটি ছোট ছোট ট্রেন্ডের সমন্বয়ে গঠিত হয়।টেকনিক্যাল এনালাইসিস করার মূল লক্ষ্য হয়ে থাকে ট্রেন্ডের শুরু ও শেষ বুঝতে পারা। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় আপনি যদি ট্রেন্ড এর শুরু বুঝতে পেরে ট্রেন্ডের দিকে এন্ট্রি নেন আপনি ঐ ট্রেড থেকে থেকে অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের এর সুবিধা সমূহ:
১. টেকনিক্যাল এনালাইসিস কোম্পানির শেয়ারের মূল্যের গতিবিধি বুঝতে সহায়তা করে। কোম্পানির শেয়ারের মূল্য আপট্রেন্ডে রয়েছে নাকি ডাউনট্রেন্ডে রয়েছে নাকি একটি রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে তা বুঝতে সহায়তা করে।
২. টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনি ভালো এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্ট বের করতে পারবেন।আপনি যদি একটি কোম্পানির শেয়ার কিনতে চান তা যেকোন জায়গা থেকে কিনলেই ভালো লাভ করতে পারবেন এরকম নয় ।টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনাকে একটি ভালো এন্ট্রিপয়েন্ট থেকে শেয়ার কিনতে হবে।এক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এনালিস্টরা এর ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন, সাপোর্ট রেজিস্ট্যান্স, সাপ্লাই ডিমান্ড জোন, চার্ট প্যাটার্ন, ট্রেন্ড লাইন, হার্মনিক প্যাটার্ন ও বিভিন্ন ধরনের ইন্ডিকেটর যেমন,মুভিং এভারেজ ইত্যাদির সহায়তা নিয়ে থাকে।
৩. টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস খুব দ্রুত করা যায় যেখানে ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করতে আপনাকে অনেক ধরনের ডাটা সংগ্রহ করতে হবে যার প্রক্রিয়া একটু জটিল ।কিন্তু আপনি টেকনিক্যাল এনালাইসিস একবার আয়ত্ত করতে পারলে খুব সহজেই যে কোন একটা চার্ট দেখে এবং কিছু ড্রইং এর মাধ্যমে খুব সহজে আপনার টেকনিক্যাল এনালাইসিস কম সময়ে সম্পন্ন করতে পারবেন
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের সীমাবদ্ধতা:
১. টেকনিক্যাল এনালাইসিস সব সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত দেবে এরকম নয় ।
২. টেকনিক্যাল এনালাইসিসের বিভিন্ন ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে নেয়া এন্ট্রি অনেক সময় ঠিকমতো কাজ করে না।
৩. নানা ধরনের ইন্ডিকেটর থাকায় অনেক সময় দেখা যায় কোন ইন্ডিকেটর বাই সিগন্যাল দিচ্ছে এবং কোন ইন্ডিকেটর সেল সিগন্যাল দিচ্ছে। নতুন একজন ট্রেডার এক্ষেত্রে কনফিউজড হয়ে যায় কোন ইন্ডিকেটর সিগনাল সিগনাল সঠিক এবং কোন ইন্ডিকেটর এর সিগন্যাল ভুল তা বুঝতে।
শেয়ার মার্কেট এনালাইসিস করার ক্ষেত্রে বিনিয়োগকারীরা প্রধানত যে দু’ধরনের এনালাইসিস ব্যবহার করে থাকেন একটি হচ্ছে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এবং অপরটি ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো পূর্বের মূল্যের গতিবিধি পর্যালোচনা করা ও এর উপর ভিত্তি করে বর্তমান ট্রেডিং কন্ডিশনে মূল্য কেমন মুভ করছে তা নির্ধারন করা এবং তা থেকে নিকট ভবিষ্যতের মূল্যের সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে একটা ধারণা নেওয়া।
টেকনিক্যাল এনালিস্টদের মূল বিশ্বাস এই যে মার্কেটের সকল ধরনের তথ্য মূল্যের মধ্যেই পাওয়া যায় এবং সংক্ষেপে বলতে গেলে তাদের ধারণা করে “যে সবকিছুই চার্টের মধ্যে রয়েছে ”
ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর মতন এখানে কোন কোম্পানির আর্থিকদিকগুলো বিশ্লেষণ করা হয় না ।
একজন বিনিয়োগকারী যদি টেকনিক্যাল এনালাইসিস এ দক্ষ হয় এবং আগের মার্কেট প্যাটার্ন গুলো শনাক্ত করতে পারেন তবে তিনি ভবিষ্যৎ দামের একটি ধারণা করতে পারবেন। টেকনিক্যাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি হলো বিভিন্ন ধরনের চার্ট প্যাটার্ন যা একজন বিনিয়োগকারীকে ভবিষ্যতের মূল্য
সম্পর্কে অনুমান করতে সহায়তা করে।ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এনালাইসিস খুবই কার্যকরী।
আপনারা নিশ্চয়ই একটি প্রাচীন প্রবাদ শুনে থাকবেন “history tends to repeat itself”।এটিই টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর সারসংক্ষেপ কারণ টেকনিক্যাল এনালাইসিসের বিশ্বাস করা হয়েছে পূর্বে যেসব প্যাটার্ন তৈরি হওয়ার পর মার্কেট যেভাবে আচরণ করেছে ভবিষ্যতেও তা হওয়ার পর মার্কেট একই ভাবে আচরণ করবে।আপনি যদি সে সব প্যাটার্ন গুলো জানেন এবং চার্ট এর মধ্যে তা ধরতে পারেন তাহলে আপনি মূল্যের গতিবিধি সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন।চার্ট প্যাটার্ন গুলোর মূলে রয়েছে হিউম্যান সাইকোলজি যা সাধারণত পরিবর্তন হয় না তাই এগুলো সচরাচর পূর্বের মত কাজ করে থাকে।
ইতিহাস:
স্টক মার্কেটে টেকনিক্যাল এনালাইসিস কয়েকশ বছর ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। ১৭ শতকের দিকে টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর যাত্রা শুরু করেছিলেন ইউরোপে “Joseph De La Vega” ডাচ মার্কেট এনালাইসিস করতে গিয়ে। কিন্তু মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর কথা বলতে গেলে যাদের নাম অবশ্যই নিতে হবে তারা হলেন চার্লস ডাউ,উইলিয়াম হ্যামিল্টন,এডসন গোউল্ড এবং আরো অনকে। মর্ডান টেকনিক্যাল এনালাইসিসে তারা মুল্যের হ্রাস-বৃদ্ধি এনালাইসিস করে সম্ভাব্য মুভমেন্ট সম্পর্কে ধারনা করা শুরু করেন।
ক্যান্ডেলস্টিক চার্টের জনক জাপানিজরা। এজন্য ক্যান্ডেলস্টিককে কখনো কখনো জাপানিজ ক্যান্ডেলস্টিক ও বলা হয়। প্রাচীন এই প্যাটার্ন এনালাইসিস ১৯৯০ সালের দিকে আমেরিকাতে জনপ্রিয় হয়ে উঠে।
টেকনিকাল এনালাইসিসের মূল ভিত্তি :
একজন টেকনিক্যাল অ্যানালিস্ট মূলত প্রাইজের মুভমেন্ট, ট্রেন্ড এবং চার্ট প্যাটার্ন ব্যবহার করে মার্কেট সেন্টিমেন্ট বুঝার চেষ্টা করেন ।
ক. ডাউ তার টেকনিকাল এনালাইসি থিওরিতে বলেন চার্টের মধ্যে একটি শেয়ারের সকল ধরনের ঘটনার প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায়। মূলত চার্টকে তিনি পূর্ববর্তী ও বর্তমান প্রাইস জানার একটি মাধ্যমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ করতে চান নি। ধরুন আগামীকাল একটি কোম্পানির ব্যবসায়িক কার্যক্রম খারাপ দিকে পরিচালিত হলো বা কোম্পানির কোনো কেলেঙ্কারি ফাঁস হলো বা কোম্পানি সম্পর্কিত একটি খারাপ নিউজ বের হলো এসবের কারণে কোম্পানির শেয়ারের দর পতন হবে তা খুবই স্বাভাবিক।
ডাউ এর ভাষ্যমতে ভবিষ্যতের এ সম্ভাব্য ঘটনাবলী চার্টেই গাথা রয়েছে। কোন একটি কোম্পানির পূর্বের সকল ধরনের ঘটনার ফলাফল চার্টের মধ্যে বিদ্যমান এবং এসব কিছুকে নিয়েই চার্ট উঠানামা করে। তাই উনার মতে কোম্পানির বিভিন্ন ফান্ডামেন্টাল ও অর্থনৈতিক দিক নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে শুধু চার্ট এনালাইসিস করেই আপনি দাম সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করতে পারবেন। উনি এও বলেন আপনি যদি শুরুতেই টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে একটা কোম্পানির শেয়ারের দাম সম্পর্কে ধারণা করেন এবং ট্রেডিং সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তাহলে আপনাকে আর সাথে অতিরিক্ত ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করার যৌক্তিকতা নেই কারণ ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর অন্তর্নিহিত বিষয়গুলো টেকনিক্যাল এনালাইসিসের চার্টের মধ্যে ফুটে উঠেছে বলেই প্রাইজে এভাবে মুভমেন্ট করছে।
খ. ১৯ শতকের দিকে ডাউ কিছু শেয়ারের মূল্য এনালাইসিস করতে গিয়ে লক্ষ করেন যে, শিল্পক্ষেত্রে উৎপাদন কাজে জড়িত কিছু শেয়ারের মূল্য যখন বৃদ্ধি পায় সেইসাথে পরিবহনের সাথে জড়িত কোম্পানির শেয়ারগুলোর মূল্য বৃদ্ধি পায় ।ঘটনাটি বিশ্লেষণ করে ডাউ বলেন যে,এক শিল্পের শেয়ারগুলো শুধু বৃদ্ধি পায় না বরং উক্ত শিল্পের সাথে সম্পর্কিত শেয়ারগুলোর দাম বৃদ্ধি করতে প্রভাবিত করে এবং দুইটি শেয়ারের মূল্য যখন একইসাথে বৃদ্ধি পায় তখন একটি শক্তিশালী ট্রেন্ডের সৃষ্টি হয়।
যেসকল কোম্পানির শেয়ার একইসাথে মুভ করে সেসব কোম্পানির শেয়ার টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনি কার্যকরী ট্রেডিং সিদ্ধান্তে আসতে পারেন ।ধরে নিই A এবং B দুটি কোম্পানির শেয়ার একে অপরের সাথে সম্পর্কযুক্ত এবং একইসাথে মুভ করে ।আপনি A কোম্পানির শেয়ারের টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে দেখলেন যে তা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।একই সাথে আপনি B কোম্পানির শেয়ার টেকনিকাল এনালাইসিস করে দেখলেন সেটিও ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ।
যেহেতু দুইটি কোম্পানির শেয়ার একইসাথে মুভ করে এবং দুইটি কোম্পানি থেকে আপনি ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন তাই এই অ্যানালাইসিস থেকে প্রাপ্ত সিগনাল খুবই শক্তিশালী হয় ।
অনেক বিনিয়োগকারী এই ধরনের টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে নিম্নোক্তভাবে বিনিয়োগ করে থাকেন :
ধরেন একজন বিনিয়োগকারী ১০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করবেন।
এখন তিনি শুধুমাত্র A কোম্পানীতে ১০০০০ টাকা বিনিয়োগ না করে একই সাথে মুভমেন্ট করে এমন কোম্পানি B তেও ভাগ করে বিনিয়োগ করেন!
কোম্পানী A তে ৫০০০ এবং B তে ৫০০০। এভাবে বিনিয়োগ করার সুফল টা হল A কোম্পানী যদি কোনো কারণে আশানুরূপ রেজাল্ট না ও দেয় তাহলে ও আপনার B কোম্পানি থেকে ভালো লাভ করার সম্ভাবনা থাকতে পারে।কিন্তু আপনি শুধু একটি কোম্পনীতে বিনিয়োগ করলে আর তা থেকে আশানুরূপ রেজাল্ট না পেলে আপনার কিছুই করার থাকতো না।
গ. শেয়ারবাজারে একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম ওয়েভ বা ঢেউয়ের মতো ওঠানামা করে। এটি কখনোই শুধু সোজা উপরে উঠে যায় না বা সোজা নিচে নেমে যায় না।যখন একটি কোম্পানির শেয়ারের দাম দীর্ঘ সময় ধরে উপরে উঠতে থাকে বা নিচে নামতে থাকে তখন তাকে ট্রেন্ড বলা হয়।
ডাউ থিউরি অনুযায়ী দীর্ঘমেয়াদী, মধ্যমেয়াদী এবং স্বল্প মেয়াদী এই তিন ধরনের ট্রেন্ড হয়ে থাকে।
দীর্ঘমেয়াদী ট্রেন্ড সাধারণত এক বছর থেকে কয়েক বছর পর্যন্ত স্থায়ী হয়,
মধ্যমেয়াদি ট্রেন্ড তিন সপ্তাহ থেকে তিন মাস পর্যন্ত স্থায়ী হয় ,
স্বল্পমেয়াদী ট্রেন্ড তিন সপ্তাহ বা তার কম সময় পর্যন্ত স্থায়ী হয়।
একটি দীর্ঘমেয়াদি ট্রেন্ড সাধারণত কয়েকটি ছোট ছোট ট্রেন্ডের সমন্বয়ে গঠিত হয়।টেকনিক্যাল এনালাইসিস করার মূল লক্ষ্য হয়ে থাকে ট্রেন্ডের শুরু ও শেষ বুঝতে পারা। কারণ প্রাথমিক অবস্থায় আপনি যদি ট্রেন্ড এর শুরু বুঝতে পেরে ট্রেন্ডের দিকে এন্ট্রি নেন আপনি ঐ ট্রেড থেকে থেকে অনেক বেশি লাভবান হতে পারবেন।
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের এর সুবিধা সমূহ:
১. টেকনিক্যাল এনালাইসিস কোম্পানির শেয়ারের মূল্যের গতিবিধি বুঝতে সহায়তা করে। কোম্পানির শেয়ারের মূল্য আপট্রেন্ডে রয়েছে নাকি ডাউনট্রেন্ডে রয়েছে নাকি একটি রেঞ্জের মধ্যে রয়েছে তা বুঝতে সহায়তা করে।
২. টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনি ভালো এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্ট বের করতে পারবেন।আপনি যদি একটি কোম্পানির শেয়ার কিনতে চান তা যেকোন জায়গা থেকে কিনলেই ভালো লাভ করতে পারবেন এরকম নয় ।টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে আপনাকে একটি ভালো এন্ট্রিপয়েন্ট থেকে শেয়ার কিনতে হবে।এক্ষেত্রে টেকনিক্যাল এনালিস্টরা এর ক্যান্ডেলস্টিক প্যাটার্ন, সাপোর্ট রেজিস্ট্যান্স, সাপ্লাই ডিমান্ড জোন, চার্ট প্যাটার্ন, ট্রেন্ড লাইন, হার্মনিক প্যাটার্ন ও বিভিন্ন ধরনের ইন্ডিকেটর যেমন,মুভিং এভারেজ ইত্যাদির সহায়তা নিয়ে থাকে।
৩. টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস খুব দ্রুত করা যায় যেখানে ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস করতে আপনাকে অনেক ধরনের ডাটা সংগ্রহ করতে হবে যার প্রক্রিয়া একটু জটিল ।কিন্তু আপনি টেকনিক্যাল এনালাইসিস একবার আয়ত্ত করতে পারলে খুব সহজেই যে কোন একটা চার্ট দেখে এবং কিছু ড্রইং এর মাধ্যমে খুব সহজে আপনার টেকনিক্যাল এনালাইসিস কম সময়ে সম্পন্ন করতে পারবেন
টেকনিক্যাল এনালাইসিসের সীমাবদ্ধতা:
১. টেকনিক্যাল এনালাইসিস সব সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত দেবে এরকম নয় ।
২. টেকনিক্যাল এনালাইসিসের বিভিন্ন ইন্ডিকেটর ব্যবহার করে নেয়া এন্ট্রি অনেক সময় ঠিকমতো কাজ করে না।
৩. নানা ধরনের ইন্ডিকেটর থাকায় অনেক সময় দেখা যায় কোন ইন্ডিকেটর বাই সিগন্যাল দিচ্ছে এবং কোন ইন্ডিকেটর সেল সিগন্যাল দিচ্ছে। নতুন একজন ট্রেডার এক্ষেত্রে কনফিউজড হয়ে যায় কোন ইন্ডিকেটর সিগনাল সিগনাল সঠিক এবং কোন ইন্ডিকেটর এর সিগন্যাল ভুল তা বুঝতে।
৪. একাধিক বিনিয়োগকারীর টেকনিক্যাল এনালাইসিস অনেক সময় এ্করকম হয়না। এরকম দেখা যায় যে টেকনিক্যাল এনালাইসিস করে কেউ বাই করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন এখানে অপরজন জন সেল করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন। সেক্ষেত্রে আপনার ট্রেড থেকে আপনি কতটুকু লাভ করতে পারবেন তা নির্ভর করবে আপনার টেকনিক্যাল এনালাইসিসের দক্ষতার উপর।
টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস একজন বিনিয়োগকারীকে মার্কেটের ট্রেন্ড বুঝতে এবং ভালো এন্ট্রি ও এক্সিট পয়েন্ট বের করতে সাহায্য করে তাই এর বিকল্প নেই।সর্বোপরি বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশিত মুনাফা অর্জনে ফান্ডামেন্টাল এনালাইসিস এর পাশাপাশি টেকনিক্যাল এনালাইসিস অপরিহার্য ভূমিকা রাখে।
StockNow apps এ কীভাবে ইনডিকেটর রিমুভ করতে অনুগ্রহ করে নিচের লিংকের ভিডিওটি দেখুন
ডিভিডেন্ড কি?
একটি ডিভিডেন্ড হল একটি স্টক বা মিউচুয়াল ফান্ড থেকে উপার্জনের বিতরণ করা অংশ। ফান্ডটি যখন তার পোর্টফোলিওতে সিকিউরিটিজ বিক্রি করে প্রফিট করে তখন ডিভিডেন্ড বিতরণ করা হয়।
নিয়মানুসারে, কোনও পোর্টফোলিওতে সিকিউরিটিজ বিক্রয় করে যদি লাভ হয়, অথবা সুদ বা লভ্যাংশের আকারে কোনও কারেন্ট আয় হয়, কেবল তখনই একটি ফান্ড ডিভিডেন্ড ঘোষণা করতে পারে। এই ধরনের লাভগুলিকে একটি ডিভিডেন্ড ইকুয়ালাইজেশন রিসার্ভে ট্রান্সফার করা হয়, এবং ট্রাস্টিদের বিবেচনার ভিত্তিতে একটি লভ্যাংশ ঘোষিত হয়।
স্কিমটির ফেস ভ্যাল্যুর (FV) শতাংশ হিসেবে ডিভিডেন্ড ঘোষণা করা হয়, NAV নয়। ইউনিট প্রতি FV 10 টাকা এবং ডিভিডেন্ডের হার 20% হলে, ডিভিডেন্ড বিকল্পের প্রতিটি বিনিয়োগকারী ডিভিডেন্ড হিসেবে 2 টাকা পান। তবে, ডিভিডেন্ড ঘোষণার পরে স্কিমটির NAV-র সমতুল্য পতন হয়। গ্রোথ বিকল্পের বিনিয়োগকারীদের ডিভিডেন্ড পাওয়ার অধিকার নেই এবং এই ক্ষেত্রে স্কিম থেকে অর্জিত লাভ স্কিমটিতে
১. ঋণকে না বলুন, চিন্তামুক্ত থাকুন
শেয়ারবাজার এমনিতেই ঝুঁকিপূর্ণ বাজার। এ বাজারে বিনিয়োগের বিপরীতে বেশি মুনাফার সম্ভাবনা যেমন থাকে, তেমনি লোকসানের ঝুঁকিও প্রবল। এ জন্য শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকে সব সময় ঝুঁকিপূর্ণ বিনিয়োগ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। শেয়ারবাজার সবার বিনিয়োগের জায়গা নয়। এখানে বিনিয়োগ করতে হলে বাজার সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞান থাকা আবশ্যক। যদিও আমাদের বাজারে অনেক বিনিয়োগকারী বাজার সম্পর্কে সম্যক ধারণা না নিয়েই বিনিয়োগ করে থাকেন। তাই সাধারণ বিনিয়োগকারীদের জন্য আমার প্রথম পরামর্শ ঋণ করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ না করার। যেকোনো ধরনের ঋণ ঝুঁকিপূর্ণ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের ঝুঁকিকে বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। তাই নিজেকে ঋণমুক্ত রাখা মানে ঝুঁকির মাত্রা কম। ঋণ করে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করলে দুই ধরনের ঝুঁকি তৈরি হয়। প্রথমত সুদের হারের ঝুঁকি, অন্যটি মূলধন হারানোর ঝুঁকি। সাধারণত তারাই শেয়ারবাজারে ঋণ করে লাভ করতে পারেন, যাঁদের বাজার সম্পর্কে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে। কারণ, তাঁরা জানেন কখন, কী পরিমাণ ও কোন শেয়ারের বিপরীতে ঋণ নেওয়া যায়। আবার কখন ঋণ থেকে বেরিয়ে যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে StockNow apps সাহায্য নিতে পারেন market analysis করতে
২. ঋণমুক্ত কোম্পানিতে বিনিয়োগ করুন
যদি আপনি নতুন করে বিনিয়োগের কথা ভাবেন, তাহলে আমার পরামর্শ, তালিকাভুক্ত যেসব কোম্পানির স্থিতিপত্র বা ব্যালান্সশিটে ঋণের দায় তুলনামূলক কম, সেসব কোম্পানিতেই বিনিয়োগ করুন। যে কোম্পানির ঋণ যত বেশি, সেই কোম্পানির মুনাফার ওপর তত বেশি চাপ থাকে। কারণ, মুনাফার একটি বড় অংশ সুদ পরিশোধে ব্যয় করতে হয়। ঋণের দায় কম এমন কোম্পানি বাছাই করার ক্ষেত্রে সাত–আট বছরের স্থিতিপত্র ভালোভাবে পর্যালোচনা করুন। যদি দেখেন, কোম্পানিটির ঋণের পরিমাণ তুলনামূলকভাবে কম বা পুরোনো ব্যাংকঋণ ক্রমাগতভাবে কমে আসছে, তাহলে বুঝবেন কোম্পানিটির নিজস্ব আর্থিক ভিত্তি বেশ শক্তিশালী। কোম্পানি ব্যাংকঋণমুক্ত থাকলে অর্থনীতিতে খারাপ অবস্থা থাকলেও ওই কোম্পানির ব্যবসা খুব বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় না। এ ছাড়া কম ব্যাংকঋণ আছে এমন কোম্পানি থেকে ভালো লভ্যাংশ পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বর্তমানে আমাদের বাজারে ভালো মৌলভিত্তির বেশ কিছু কোম্পানি রয়েছে, যাদের ব্যাংকঋণের পরিমাণ খুবই কম। তাই নিজেকে ঋণমুক্ত রাখার পাশাপাশি কম ঋণ আছে এমন কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ করুন।
৩. সঞ্চয়ের একটি অংশ শেয়ারবাজারে আনুন
আপনি যদি চাকরিজীবী হন, তাহলে মাস শেষে সব খরচ বাদ দেওয়ার পর হয়তো একটু একটু করে সঞ্চয়ের মাধ্যমে কিছু অর্থ জমিয়েছেন। সেই সঞ্চয়ের পুরোটা কখনো শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করবেন না। মাস শেষে নির্ধারিত হারে মুনাফা পাবেন এমন কিছু আর্থিক পণ্যে সঞ্চয়ের অর্ধেক অর্থ বিনিয়োগ করুন। বাকি অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে কিছুটা ভাগ্যবদলের ঝুঁকি নিতে পারেন। তবে সেই ঝুঁকি নেওয়ার আগে বাজার সম্পর্কে ন্যূনতম কিছু ধারণা থাকা চাই। আমাদের দেশে চাকরিজীবীদের জন্য সঞ্চয়ের সবচেয়ে লাভজনক বিনিয়োগ পণ্য এখন পর্যন্ত সঞ্চয়পত্র। সাম্প্রতিক সময়ে ব্যাংকে সুদহার কমানোর নানা চেষ্টা চলছে। যদি ঋণ-আমানতের সুদহার সত্যিই সত্যিই নয়-ছয়ে নেমে আসে, তাহলে ব্যাংকে টাকা রাখার বদলে শেয়ারবাজারে ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিতে বিনিয়োগ অনেক লাভজনক হবে। কারণ, তাতে অন্তত বছর শেষে ব্যাংকের চেয়ে বেশি মুনাফা পাওয়া যাবে। কিন্তু সেই বিনিয়োগের আগে ওপরের পরামর্শগুলো মেনে চললে আপনার ঝুঁকি কমে আসবে বলে মনে করি।
৪. কোম্পানির উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপকদের জানুন
আমাদের মতো দেশে কোনো কোম্পানিতে বিনিয়োগের আগে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত ওই কোম্পানির উদ্যোক্তা কারা, ওই কোম্পানির ব্যবস্থাপনায় কারা রয়েছেন। কারণ, আপনার বিনিয়োগের লাভ-ক্ষতি পুরোপুরি নির্ভর করছে তাঁদের ওপর। কোম্পানিগুলোর ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেন উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত শীর্ষ নির্বাহীরা মিলে। তাই সেই লোকগুলো কতটা পেশাদার, সমাজে কতটা গ্রহণযোগ্য, তাঁদের ব্যবসায়িক ঐতিহ্য ও অভিজ্ঞতা কী, তা জানা জরুরি। যদি দেখেন, উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপকদের সফল ও লাভজনকভাবে ব্যবসা পরিচালনার দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা রয়েছে, তবে সেই কোম্পানিতে বিনিয়োগ করে আপনিও লাভের আশা করতে পারেন। অন্যথায় আপনার বিনিয়োগ শুরুতেই ঝুঁকিতে পড়বে। বিনিয়োগের আগে একটু ভালোভাবে খোঁজখবর নিলে উদ্যোক্তাদের সম্পর্কে ধারণা পাওয়া আপনার জন্য খুব কঠিন হবে না। যে কোম্পানির উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপকেরা যত ভালো, সেই কোম্পানির আর্থিক স্বচ্ছতা ও সুশাসন তত উন্নত। তাই স্বচ্ছতা ও সুশাসন আপনার বিনিয়োগকে সুসংহত করবে।
৫. বিনিয়োগের কিছু অর্থ পেশাদারদের হাতে দিন
বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে সাধারণ বিনিয়োগকারীরা নিজেরা সরাসরি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করেন না। বিভিন্ন অভিজ্ঞ ও পেশাদার ফান্ড ম্যানেজারের মাধ্যমে তাঁরা বাজারে বিনিয়োগ করে থাকেন। তবে আমাদের দেশে বেশির ভাগ সাধারণ বিনিয়োগকারী নিজেরাই বিনিয়োগ ও লেনদেন করেন। এর ফলে অনেকে লোকসানে পড়েন হরহামেশা। তাই আমার পরামর্শ, আপনি যে পরিমাণ অর্থ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করবেন বলে ঠিক করেছেন, তার অর্ধেক ভালো ও দক্ষ কোনো ফান্ড ম্যানেজারের হাতে তুলে দিন। বাকি অর্ধেকটা দিয়ে আপনি নিজে বিনিয়োগ করতে পারেন। তাতে আপনার ঝুঁকি কমবে অনেক। দক্ষ ফান্ড ম্যানেজার আপনার বয়স, আয় ও ঝুঁকি নেওয়ার সক্ষমতা বিবেচনায় আপনার অর্থ বিনিয়োগ করবেন। আমাদের বাজারেও অনেক দক্ষ, অভিজ্ঞ ও পেশাদার ফান্ড ম্যানেজার রয়েছে। শুধু আপনার হয়ে বিনিয়োগ করার দক্ষ ফান্ড ম্যানেজারটি খুঁজে নিতে হবে আপনাকেই।
এমন একটি ব্যবসার কথা চিন্তা করুন যে ব্যবসাতে দৈনিক এক ঘণ্টারও কম সময় ব্যয় হয়, যে ব্যবসায়ের জন্য প্রচুর মূলধনের প্রয়োজন নেই, যে ব্যবসা অপেক্ষাকৃত কম সময়ে শেখা যায় এবং যেখান থেকে নিয়মিতভাবে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমান অর্থ উপার্জন করা সম্ভব, তাহলে এমন একটি ব্যবসা অপেক্ষা ভালো ব্যবসা কি অন্য কোথাও রয়েছে? বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতিমাসে প্রচুর মানুষ এই ব্যবসাতে ঝুঁকে পড়ছেন পূর্ণ কিম্বা খণ্ডকালীন ব্যবসায়ী হিসেবে এবং অনেকে প্রচুর অর্থও উপার্জন করছেন। এমনকি শেয়ার ব্যবসা বিষয়ক জ্ঞান নেই এমন অনেকেও নির্ভরযোগ্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে সফল শেয়ার ব্যবসায়ী হয়ে উঠছেন। কেন শেয়ার ব্যবসায়ের প্রতি মানুষের আগ্রহ সে বিষয়েই নিম্নে আলোচনা করা হল।
মনে করা যাক, আপনার দশ লাখ টাকা পুঁজি আছে। একটি লাভজনক শিল্প কারখানা স্থাপন বা অন্য কোনো লাভজনক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আপনি উক্ত অর্থ বিনিয়োগ করতে ইচ্ছুক। কিন্তু টাকা খাটানোর জন্য যে সময় ও শ্রম দেয়ার প্রয়োজন তা আপনার নেই।অথবা দেশের এক প্রত্যন্ত অঞ্চলে আপনি বাস করছেন যেখানে সম্ভাবনাময় শিল্প স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় কাঁচামাল পাওয়া যায় না। বাজারও সীমিত। দক্ষ শ্রমিকের অভাব রয়েছে, শিল্প কারখানা পরিচালনা করার জন্য, পণ্য বিক্রির জন্য যে ঝামেলা রয়েছে তাও আপনার জন্য প্রীতিদায়ক নয়। আপনার এলারকার কিছু ব্যক্তি তাদের সঞ্চিত পুঁজি বিনিয়োগ করে ছোট ছোট ব্যবসা শুরু করেছেন, কেউ কেউ রাইস মিল কিম্বা হালকা প্রকৌশল কারখানা স্থাপন করেছেন। কিন্তু বীব্র প্রতিযোগিতা এবং অন্যান্য বহুবিধ কারণে ওই সব ব্যবসা থেকে সন্তোষজনক আয় আসছে না। কোনো কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান রুগ্ন হয়ে পড়েছে। কিছু ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। জাতীয় সঞ্চয় স্কিমসমূহেও আপনি টাকা খাটাতে আগ্রহী নয়েন। কারণ দীর্ঘদিন পরে টাকা ফেরত পাওয়ার সময় মুদ্রাস্ফীতির কারণে ওই টাকার প্রকৃত মূল্য বা ক্রয় ক্ষমতা কমে আসবে। ব্যাংক আমানত থেকেও অপেক্ষাকৃত অনেক কম হারে সুদ পাওয়া যায়। তােই আপনি অপেক্ষাকৃত ভালো বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজছেন। উপরন্তু মৌলিক চাহিদা মিটানোর পর জমিজমা, বাড়িতে অতিরিক্ত বিনিয়োগ করতে কেউ কেউ আগ্রহী থাকেন না। আমরা জানি বিনিয়োগকারীদেরও শ্রেণিভাগ আছে। যারা জমিজমা, বাড়ি ক্রয়ে আগ্রহী না হয়ে বিভিন্ন আর্থিক হাতিয়ারে (শেয়ার, সঞ্চয়, প্রকল্প ইত্যাদি) বিনিয়োগ করতে আগ্রহী তারাই আমাদের আলোচনার লক্ষ্যবিন্দু।
এমতাস্থায়, মনে করা যায়, একই সময়ে স্ব স্ব পেশাতে স্বনামধন্য কয়েক ব্যক্তি কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে রপ্তানিমুখী অতি সম্ভাবনাময় একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে যাচ্ছেন। প্রস্তাবিত প্রতিষ্ঠানটি থেকে বাৎসরিক গড় আয়ের পরিমাণ দাঁড়াবে ৫০%। নিজ উদ্যোগে সীমিত সামর্থে কোনো ব্যবসা শুরু করে বর্তমান সময়ে ওই পরিমাণ লাভ পেতে থাকবেন এমন প্রস্তাবের ভিত্তিতে যদি প্রতিষ্ঠানটির মালিকানার অংশ আপনাকে দিয়ে দেয়া হয় তাহলে এর চেয়ে ভালো বিনিয়োগের সুযোগ আপনার জন্য আর কিইবা হতে পারে। উপরন্তু শেয়ারের দর বৃদ্ধি প্রাপ্ত হলে অতি অল্প সময়ে ওই শেয়ার বা মালিকানার অংশ বিক্রি করে দিয়ে মূলধনী লাভ অর্জন করার সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে।অপরদিকে স্ব উদ্যোগে স্থাপিত স্থাপিত কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান অলাভজনক প্রতীয়মান হওয়া সত্ত্বেও জমি, কারখানাঘর, যন্ত্রপাতি ও মজুদ মালামাল বিক্রি করে দিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ব্যবসা থেকে বেরিয়ে আসা সম্ভব হয় না। অথচ তালিকাভুক্তি কোম্পানির শেয়ারে বিনিয়োগ থেকে সহজে বেরিয়ে আসা সম্ভব। অন্যান্য প্রয়োজনেও আপনি তাৎক্ষনিকভাবে মালিকানার অংশ বা শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে নগদ অর্থ হাতে পেতে পারেন। সেকেন্ডারি বাজার থেকে শেয়ার ক্রয় করে লাভ, লভ্যাংশ বা অন্যান্য প্রাপ্তির সুযোগ থাকে। শেয়ার থেকে প্রাপ্ত গড় লাভ অপেক্ষা বেশি লাভ অন্য কোনো বিকল্প বিনিয়োগের সূত্র থেকে পাওয়া দুষ্কর।
শেয়ার ব্যবসা অধিকতর আকর্ষণীয় হওয়ার কারণ হিসেবে যেসব বিষয় চিহ্নিত করা যায় সেগুলো নিম্নরূপ:
১. সঠিক শেয়ারে বিনিয়োগ করে অল্প সময়ে এমনকি মাঝে মধ্যে মাত্র কয়েকদিনের বা সপ্তাহের ব্যবধানে সন্তোষজনক, এমনকি অনেক ক্ষেত্রে আশাতীত লাভ অর্জন করা সম্ভব হয়। লাভ আসে বিভিন্নভাবে-
ক)মূলধনী লাভ বা কম দামে শেয়ার ক্রয় করে বেশি দামে বিক্রিজনিত লাভ।
খ) লভ্যাংশ;
গ)বোনাস শেয়ার বা অন্যান্য প্রাপ্তি।
২. স্বল্প মূলধনে, বিনা দক্ষতায় অনেক নামিদামি কিম্বা দক্ষ ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত শিল্প প্রতিষ্ঠানের মালিকানার অংশীদারিত্ব অজর্নন করে বিনাশ্রমে ব্যবসায়ের লভ্যাংশ ভোগ করার সুযোগ।
৩)স্বল্প শ্রম ও স্বল্প মূলধনে সঠিক বিনিয়োগ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে অপেক্ষকৃত অনেক বেশি লাভ অর্জন করা।
৪) নিজ উদ্যোগে শিল্প কারখানা স্থাপনের ক্ষেত্রে এমনকি লাভ অর্জনের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা না থাকা সত্ত্বেও সহসা কারখানা ঘর, যন্ত্রপাতি বিক্রি করে ওই ব্যবসা ত্যাগ করে নতুন সম্ভাবনাময় শিল্পে মূলধন স্থানান্তর করা সম্ভব হয়না। কিন্তু এই বিরল সুযোগ শেয়ার ব্যবসাতে রয়েছে।
৫)সিঙ্গার কোম্পানিতে ১০০ টাকা বিনিয়োগ করে ১৬ বছরে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৬০ টাকা প্রাপ্তির (অতি রক্ষণশীল হিসাব)বিষয়টি বিবেচনা করুন। এমন যুযোগ শেয়ারবাজারে পুনরায় আসবে না এ ধারণার ভিত্তিতে হয়তোবা অনেকে এ উদহারনটিকে গুরুত্ব দেবেন না। তবে সিঙ্গারের সফলতার আলোকে এদেশের অন্যান্য বিনিয়োগের ক্ষেত্র অপেক্ষা বেশি লাভ অর্জনের জন্য সম্ভাবনাময় শেয়ার যারা খুঁজে পাবেন তাদের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের শ্রেষ্ঠতম স্থান হলো শেয়ারবাজার।
৬) যে কোনো জরুরি মুহূর্তে আংশিক বা সম্পূর্ণ শেয়ার বিক্রয় করে দিয়ে প্রয়োজনীয় অর্থ হাতে পাওয়ার নিশ্চয়তা ইত্যাদি।
ঝুঁকি !!!
যে বিষয়টি অনেকের জন্য আশ্চর্যজনক সেটি হচ্ছে,অনেকে যেমনটি মনে করেন শেয়ার ব্যবসাতে ঝুঁকির মাত্র তেমন বেশি নয়!!! শেয়ারের উচিত দর জানা সম্ভব হলে এবং সঠিক সময়ে উচিত দরে শেয়ার ক্রয় করা সম্ভব হলে ঝুঁকির মাত্রা অতি নগন্য !!!
শেয়ারবাজারের কোনো কোম্পানির শেয়ার কেনার আগে ওই কোম্পানির আর্থিক অবস্থা সম্পর্কে ধারণা নেওয়া খুবই জরুরি। একেকটি কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনেক তথ্য থাকে। সব তথ্য জানা–বোঝা সবার পক্ষে সম্ভবও নয়। তবে শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীরা শেয়ার কেনাবেচার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বেশি যেসব তথ্যের পেছনে ছোটেন, তার একটি শেয়ারপ্রতি আয় বা ইপিএস। যদি শেয়ারবাজার নিয়ে আপনার কোনো ধারণা না থাকে, তাহলে আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ইপিএস—এটি আবার কী? হ্যাঁ, আপনার জন্যই বিষয়টি ব্যাখ্যা করছি। একটি কোম্পানি নির্দিষ্ট একটি সময়ে সব খরচ বাদ দেওয়ার পর যে মুনাফা করে, তার ভিত্তিতেই ওই কোম্পানির ইপিএস হিসাব করা হয়। সহজেই বের করা যায় এ হিসাব। ধরা যাক, ২০২০ সালে সব খরচ বাদ দেওয়ার পর ‘এ’ কোম্পানির মুনাফা হয়েছে ১ কোটি টাকা। ওই কোম্পানির মোট শেয়ার রয়েছে ১০ লাখ। তাতে ২০২০ সাল শেষে ‘এ’ কোম্পানির ইপিএস দাঁড়াবে ১০ টাকা। কোম্পানির মুনাফাকে মোট শেয়ারসংখ্যা দিয়ে ভাগ করে ইপিএস বের করা হয়।
এখন আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে, ইপিএসটা জানা কেন জরুরি? এ প্রশ্নের সহজ উত্তর হচ্ছে, আপনার হাতে যে কোম্পানির শেয়ার আছে, তার বিপরীতে ওই কোম্পানির আয় কেমন, তা জানাটা আপনার জন্য অবশ্যই জরুরি। কারণ, ইপিএসের জন্যই শেয়ারের দামের কম-বেশি হয়। ইপিএস বাড়লে শেয়ারের দাম বাড়ে, আর ইপিএস কমলে দাম কমে। আবার ইপিএসের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয় মূল্য আয় অনুপাত বা পিই রেশিও। সেই পিই রেশিওর ভিত্তিতে শেয়ারের বিপরীতে ঋণপ্রাপ্তি নির্ভর করে। সহজ করে বললে ইপিএস ভালো মানে কোম্পানির ব্যবসা ভালো, আর ইপিএস খারাপ মানে ব্যবসা খারাপ। তাই ভালো ব্যবসা করা কোম্পানির শেয়ার কিনবেন নাকি ব্যবসায় খারাপ করা কোম্পানির শেয়ার কিনবেন—সিদ্ধান্ত আপনার।
মার্কেট কখন বুল, কখন বেয়ার হয় ?
শেয়ার কী জানলেন। কোথায় এ শেয়ারের হাতবদল হয়, তা–ও জানলেন। এখন তবে জেনে নিন শেয়ারবাজারের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। শেয়ারবাজারের ক্ষেত্রে দুটি শব্দ খুব বেশি ব্যবহৃত হয়। তার একটি বুল মার্কেট, অন্যটি বেয়ার মার্কেট। বুল মানে ষাঁড়, আর বেয়ার মানে ভালুক—এটা সবারই জানা। তাই কেউ কেউ মজা করে ষাঁড়ের বাজার বা ভালুকের বাজারও বলে থাকেন। শেয়ারবাজারে যখন তেজিভাব বা চাঙা থাকে, তখন সেই বাজারকে বুল মার্কেট বলা হয়। আর যখন বাজারে মন্দাভাব থাকে, তখন সেটিকে বেয়ার মার্কেট হিসেবে অভিহিত করা হয়। তেজি বাজারকে ষাঁড়ের সঙ্গে এবং মন্দা বাজারকে ভালুকের সঙ্গে তুলনা নিয়েও আছে নানা রকম মুখরোচক গল্প। যদিও এসব গল্পের সত্যতা নিয়ে রয়েছে সংশয়। সবচেয়ে বেশি প্রচলিত গল্পটি হচ্ছে ষাঁড় যখন ক্ষিপ্ত হয়, তখন ওপরের দিকে লাফ দেয়। এ কারণেই অনেকে তেজি শেয়ারবাজারকে ষাঁড়ের ক্ষিপ্ততার সঙ্গে তুলনা করেন। আর ভালুক নাকি বেশির ভাগ সময়ই মাথা নিচু করে থাকে। এ কারণে অনেক মন্দা বা পড়তি বাজারকে ভালুকের সঙ্গে তুলনা করেন।
শেয়ার হচ্ছে কোনো কোম্পানি, প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার মালিকানার একটি অংশ। যেকোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানেরই মালিকানা থাকে। যেমন থাকে সম্পদের মালিকানা। কোম্পানির মালিকানা নানা ধরনের হতে পারে। সেই মালিকানার অংশ নির্ধারণ বা সংরক্ষণের একটি পদ্ধতি হচ্ছে শেয়ার। ধরা যাক, ‘এ’ একটি কোম্পানি। সেটির মালিকানার অংশীদার ১০ জন। আর কোম্পানিটির মূলধন ১ লাখ টাকা। তার মানে ১০ জন মালিকের প্রত্যেকে কোম্পানিটিতে ১০ হাজার টাকা করে মূলধন বিনিয়োগ করেছেন। এখন কোম্পানিটি বা তার ১০ মালিক চাইলে তাঁদের মালিকানার অংশটিকে শেয়ারে রূপান্তর করে নিতে পারেন। তবে কোম্পানিটির কতগুলো শেয়ারে এই ১০ জনের মধ্যে বণ্টন করা হবে, তা নির্ভর করবে ওই শেয়ারের অভিহিত মূল্য বা ফেসভ্যালু কত হবে তার ওপর। অভিহিত মূল্য ১০০ টাকা হলে সে ক্ষেত্রে প্রত্যেক মালিক ১০০টি করে শেয়ার পাবেন। এ ধরনের শেয়ারেরই লেনদেন হয় শেয়ারবাজারে।
MFI নিয়ে ভিডিও দিলে ভাল হয়।
MFI ইন্ডিকেটর দিয়ে কিভাবে সার্চ করবেন ? জানতে ক্লিক করে নিচের ভিডিও টি দেখুন